Results for বিভিন্ন দেশের নাম

বাংলাদেশ নামকরণের ইতিহাস

February 20, 2019

বাংলাদেশ নামের পেছনে রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। কীভাবে এ দেশের নাম বাংলাদেশ রাখা হল-এ বিষয়টিকে ইতিহাসের কয়েকটি পরিক্রমায় ভাগ করে বিশ্লেষণ করেন ইতিহাসবিদরা।


১৯৫২ সালে সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাংলা ভাষা থেকে বাংলা। এর পর স্বাধীন দেশের আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে দেশ। এই দুটি ইতিহাস ও সংগ্রামকে এক করে 'বাংলাদেশ' নামকরণ করা হয়।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেনও বাংলাদেশ শব্দের উৎপত্তিগত ব্যাখ্যা দেন।


তার মতে, আর্যরা বঙ্গ বলে এই অঞ্চলকে অভিহিত করত। বাংলা শব্দের উৎপত্তি হয়েছে সংস্কৃত শব্দ বঙ্গ থেকে। খবর বিবিসির।


তবে বঙ্গে বসবাসকারী মুসলমানরা বঙ্গ শব্দটির সঙ্গে ফার্সি আল প্রত্যয় যোগ করে। এতে নাম দাঁড়ায় 'বাঙাল' বা বাঙ্গালাহ। জমির বিভক্তি বা নদীর ওপর বাঁধ দেয়াকে আল বলা হয়।


সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ইতিহাসবিদ আবুল ফজলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, মুসলমান শাসনামলে বিশেষ করে ১৩৩৬ থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত সুলতানি আমলে এবং ১৫৭৬ সালে মোগলরা বাংলা দখল করার পর এ অঞ্চলটি বাঙাল বা বাঙ্গালাহ নামেই পরিচিতি পায়।


তবে বাংলা, বাঙাল বা দেশ-এই তিনটি শব্দের কোনোটিই বাংলা শব্দ নয়। এগুলো ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে।


এর পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজা বাংলাকে বিভিন্ন নাম দেন। শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাও বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা ও আসামের মতো কয়েকটি প্রেসিডেন্সি নিয়ে নাম দিয়েছিলেন বঙ্গ।


ব্রিটিশ শাসনামলে এই অঞ্চলের নাম হয় বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি। এর পর ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় গোটা বাংলায় একটি প্রশাসনিক বিভাজন হয়। বাংলার পশ্চিম অংশ হয়ে যায় পশ্চিমবঙ্গ এবং পূর্ব অংশ হয়ে যায় পূর্ববাংলা।


ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর ১৯৪৭ সালে বঙ্গপ্রদেশ ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত হল। সেই সময় পাকিস্তানিরা পূর্ববাংলার নাম দিতে চাইল পূর্ব পাকিস্তান।


কিন্তু এ নিয়ে সেই সময় থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় বাংলা।


এর পর ১৯৫৭ সালে করাচিতে পাকিস্তানের গণপরিষদের তরুণ সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান বক্তৃতা দেয়ার সময় 'পূর্ব পাকিস্তান' নামটির প্রতিবাদ করে বলেন, পূর্ববাংলা নামের একটি ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে।


'আর যদি পূর্ব পাকিস্তান নাম রাখতেই হয়, তা হলে বাংলার মানুষের জনমত যাচাই করতে হবে। তারা নামের এই পরিবর্তন মেনে নেবে কিনা-সে জন্য গণভোট নিতে হবে।'


তার পর ১৯৬২ সালে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে নিউক্লিয়াস নামে ছাত্রলীগের একটি গোপন সংগঠন প্রতিষ্ঠা পায়। যারা স্বাধীনতার পক্ষে চিন্তাভাবনা করত। তারা এই অঞ্চলকে বলতেন-স্বাধীন পূর্ববাংলা। এর পর ১৯৬৯ সালে শুরু হয় আইয়ুব পতন আন্দোলন। সেই সময় গণঅভ্যুত্থানে স্লোগান দেয়া হয় 'বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।'


ইতিহাস অনুযায়ী-ওই প্রথম পূর্ববাংলাকে 'বাংলাদেশ' নামে অভিহিত করা হয়। পরে ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন-'আমাদের স্বাধীন দেশটির নাম হবে বাংলাদেশ'।


আওয়ামী লীগের নেতারা ওই বৈঠকে বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করেন। পরে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নামটি প্রস্তাব করলে তাতে সবাই একবাক্যে সায় দেন।


এই নাম দেয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন-১৯৫২ সালে সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাংলা ভাষা থেকে- বাংলা। এর পর স্বাধীন দেশের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে- দেশ। এই দুটি ইতিহাস ও সংগ্রামকে এক করে 'বাংলাদেশ' নামকরণ করা হয়।


এর পরও নথিপত্রগুলোয় পূর্ব পাকিস্তান লিখতে হলেও কেউ মুখে পূর্ব পাকিস্তান উচ্চারণ করতেন না। সবাই বলতেন বাংলাদেশ।


সেই থেকে এই দেশকে আর কেউ পূর্ব পাকিস্তান বলেনি। সবাই বাংলাদেশ হিসেবেই মনে-প্রাণে স্বীকৃতি দিয়েছিল বলে জানান ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। মুজিবনগর সরকার স্বাধীনতার যে ঘোষণা প্রচার করে, তাতেও বলা হয়- এই দেশটির নাম হল 'বাংলাদেশ'।


১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর যখন প্রথম সংবিধান প্রণীত ও গৃহীত হয়, সেই সময়ও দেশটির সাংবিধানিক নাম দেয়া হয় 'বাংলাদেশ'।


উনিশ শতকের সাহিত্যে অবিভক্ত বাংলাকে বলা হতো- বঙ্গদেশ বা বাংলাদেশ। বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্যে বঙ্গদেশ শব্দের উল্লেখ আছে। কাজী নজরুল ইসলাম তিরিশের দশকে তার কবিতায় বাংলাদেশ নামটি ব্যবহার করেছেন। আবার সত্যজিতের চলচ্চিত্রেও উচ্চরিত হয়েছে বাংলাদেশ নামটি। অন্যদিকে জীবনানন্দ দাস বলেছেন- রূপসী বাংলা আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাকে আখ্যায়িত করেছেন সোনার বাংলা বলে। (দৈনিক যুগান্তর)

বাংলাদেশ নামকরণের ইতিহাস বাংলাদেশ নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on February 20, 2019 Rating: 5

আমেরিকার নামকরণ ইতিহাস

December 09, 2018
আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস। তিনি ছিলেন এক স্প্যানিশ নৌ-অভিযাত্রী। স্পেনের রানি তাঁকে ভারতের নৌপথ আবিষ্কারের জন্য নৌবহর আর অর্থকড়ি দিয়েছিলেন। সেই নৌবহর নিয়ে ভারতের নৌপথ আবিষ্কার করতে গিয়ে তিনি এক আস্ত অনাবিষ্কৃত মহাদেশেরই খোঁজ বের করেন।

তাহলে তো আমেরিকার নাম হতে পারত কলম্বাস নয়তো কলম্বিয়া, তাই নয় কি? তা কিন্তু হয়নি। কারণ, কলম্বাস যখন এই তল্লাট আবিষ্কার করে ফেললেন, তখনো তো তিনি জানেনই না যে তিনি আস্ত এক নতুন মহাদেশ আবিষ্কার করে বসে আছেন! তিনি ভেবেছিলেন তিনি ভারতেই পৌঁছে গেছেন। আসলে তিনি গিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে। দুই আমেরিকার মাঝে ক্যারিবিয়ান সাগরে যেই দ্বীপদেশগুলো আছে। যেই দেশগুলো একসঙ্গে হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে ক্রিকেট খেলে।

পরে আমেরিকার নামকরণ করা হয় ইতালীয় অভিযাত্রী ও মানচিত্রকর আমেরিগো ভেসপুচির নামে। আর এই নাম প্রথম ব্যবহার করেন জার্মান মানচিত্রকর মার্টিন ওয়ান্ডসিম্যুলার। এই আমেরিগো ভেসপুচি আমেরিকায় পাড়ি জমানো দ্বিতীয় ইউরোপীয় অভিযাত্রী। তিনিই প্রথম বুঝতে পারেন, এটা ভারত তো নয়ই, বরং সম্পূর্ণ নতুন এক মহাদেশ। আর তাই তাঁর নামেই হয়ে গেল নতুন মহাদেশের নাম—আমেরিকা।

১৭৭৪ সালে আমেরিকা ব্রিটিশ রাজত্ব থেকে স্বাধীন হয়। সে সময় আমেরিকার যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়, তাতেই প্রথমবারের মতো দেশটির এখনকার নাম ব্যবহার করা হয়। আমেরিকার নাম দেওয়া হয় ‘দি ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা’। সংক্ষেপে ‘ইউনাইটেড স্টেটস’ বা ‘ইউএসএ’।

তবে কলম্বাসের নাম যে দেশটিতে একেবারেই ব্যবহার করা হয় না, তা কিন্তু নয়। আমেরিকার অনেক শহরের নামের শেষেই ‘ডিসি’ বলা হয়। যেমন- ওয়াশিংটন ডিসি। এই ডিসি মানে ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া। এ ছাড়া কলম্বাসের নামে দক্ষিণ আমেরিকায় একটা আস্ত দেশও আছে- কলম্বিয়া।

সুত্রঃ NTV online
আমেরিকার নামকরণ ইতিহাস আমেরিকার নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on December 09, 2018 Rating: 5

সৌদি আরব এর নামকরণ

December 04, 2018

আল-সউদ রাজবংশের নামেই সৌদি আরবের নামকরণ হয়। সৌদি আরবই একমাত্র দেশ, যার নাম কোনো পরিবার থেকে এসেছে।   প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহ এ বংশেরই উত্তরাধিকারী।  আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ বিন সউদের ছেলেরাই পর্যায়ক্রমে দেশটির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে আসছেন।১৭০০-এর দশকে যখন স্থানীয় শেখ হিসেবে সউদ বিন মোহাম্মদ মধ্য আরব উপদ্বীপ শাসন করা শুরু করেন, তখন থেকেই এ রাজবংশের উৎপত্তি।  এর দুই শতাব্দী পর ওই রাজবংশের নামেই সৌদি আরবের নামকরণ করা হয়।  সউদ বিন মোহাম্মদের ছেলে ছিলেন মোহাম্মদ।  ১৮১৮ সালে মোহাম্মদের বংশধরেরা তুরস্কের অটোমান বাহিনীর কাছে পরাজিত হন।  তবে ছয় বছর পর সউদের বংশধরেরা ক্ষমতায় ফিরে আসেন।  ১৯০২ সালে আবদুল আজিজ বিন সউদ আরব উপদ্বীপের কেন্দ্রস্থল রিয়াদ থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রশিদি পরিবারের উত্তরাধিকারীকে উচ্ছেদ করে ক্ষমতা সংহত করেন।  দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা গোত্রগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করে পুরো অঞ্চলকে তিনি একীভূত করেন।  ১৯৩২ সালে নিজেকে সৌদি আরবের বাদশা ঘোষণা করেন আবদুল আজিজ বিন সউদ।

সৌদি আরব এর নামকরণ সৌদি আরব এর নামকরণ Reviewed by sm sohage on December 04, 2018 Rating: 5
Powered by Blogger.