Results for কলেজ

সাদত কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস

February 07, 2019
অবস্থানঃ

কলেজটি টাঙ্গাইল শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পশ্চিম পাশে করটিয়া নামক স্থানে ২৭ একর জমির উপর অবস্থিত।

নামকরণঃ

টাঙ্গাইলের শিক্ষানুরাগী জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নী ১৯২৫ সালে এতদঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারের জন্য তাঁর দাদা সাদত আলী খান পন্নীর নামে প্রতিষ্ঠা করেন।  এই কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল ছিলেন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ  ইব্রাহীম খাঁ এবং তিনি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

সাদত কলেজ সম্পর্কে বিশেষ ঃ

বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে সাদত কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও খেলাধুলার ক্ষেত্রেও কলেজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কবি বন্দে আলী মিয়া, কবি তালিম হোসেন, যাদুসম্রাট পি.সি সরকার প্রমুখ এই কলেজের ছাত্র ছিলেন।

তথ্যসুত্রঃ বাংলাপিডিয়া, ও প্রথম আলো
সাদত কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস সাদত কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on February 07, 2019 Rating: 5

আনন্দ মোহন কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস

February 07, 2019

অবস্থান ঃ ময়মনসিংহ জেলা সদরে অবস্থিত ।
নামকরণঃ
শতবর্ষের ঐতিহ্যে লালিত আনন্দ মোহন কলেজ বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ কলেজগুলোর অন্যতম। এ কলেজের রয়েছে এক সমৃদ্ধ ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আনন্দ মোহল কলেজ ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯০৯ সালে। এই মহান উদ্যোগের সঙ্গে যাঁর নাম জড়িয়ে আছে, তিনি হচ্ছেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, সমাজসংস্কারক ব্যারিস্টার আনন্দমোহন বসু ১৮৮৩ সালে ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহ শহরের রাম বাবু রোডে তাঁর পৈত্রিক বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করে "ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউশন”। ১৮৮০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউশন "ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট স্কুল” নামে অভিহিত হয়।১৮৯৯ সালে আনন্দমোহন বসু কলকাতা থেকে ময়মনসিংহ এলে ময়মনসিংহের স্থানীয় উৎসাহী অধিবাসীগণ ছাড়াও "ময়মনসিংহ সভা” এবং "আঞ্জুমানে ইসলামিয়া” এর যৌথ আবেদনে ময়মনসিংহে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবী জানানো হয়। এ দাবীর পরিপ্রেক্ষীতে কলকাতা সিটি কলেজ কাউন্সিলের সভাপতি আনন্দমোহন বসু ১৯০১ সনের ১৮ জুলাই সিটি কলেজিয়েট স্কুলকে ‘ময়মনসিংহ সিটি কলেজ’ নামে দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজে রূপান্তর করে এবং একে কলকাতার সিটি কলেজের সাথে যুক্ত করেন। ১৯০৮ সালের শেষের দিকে "ময়মনসিংহ কলেজ” এর নাম পরিবর্তন করে মৌলভী হামিদ উদ্দিন এর প্রস্তাবমতো কলেজের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা আনন্দমোহন বসুর নামানুসারে " আনন্দ মোহন কলেজ ” রাখা হয়।


আনন্দমোহন বসু সম্পর্কেঃ
জাতীয়তাবাদী নেতা, সমাজ সংস্কারক ও সাধারণ ব্রাম্ম সমাজের প্রতিষ্টাতা। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার জয়সিদ্ধি গ্রামের এক ভূস্বামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আনন্দমোহন বসু ১৮৬২ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল হতে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করেন। তিনি এফ.এ এবং বি.এ উভয় পরীক্ষায় প্রেসিডেন্সি কলেজ হতে শীর্ষস্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হন। ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষাসমূহে তাঁর অসাধারণ কৃতিত্বের ফলে তিনি ১৮৭০ সালে কাঙ্ক্ষিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়এর প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। এ বৃত্তি লাভের ফলে বসুর পক্ষে উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যাওয়া সম্ভব হয়। তিনি ক্যামব্রিজের ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে উচ্চতর গণিত বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি অনার্সসহ ডিগ্রি পরীক্ষায় (ট্রাইপস) প্রথম শ্রেণি লাভ করেন এবং প্রথম ভারতীয় র্যা ঙলার হন। একই সময়ে ১৮৭৪ সালে তিনি আইন ব্যবসা শুরু করেন।
সামাজিক জীবনে বোস এর বিজ্ঞ পরামর্শদাতা ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি যাঁর সঙ্গে ১৮৭১ সালে লন্ডনে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল। জীবনের প্রথম দিক হতেই তাঁর মন ছিল ধর্মপ্রবণ। ইংল্যান্ডে যাওয়ার পূর্বেই তিনি ১৮৬৯ সালে সস্ত্রীক ব্রাহ্ম ধর্মমত গ্রহণ করেন। বসু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে কেশবচন্দ্র সেন এর পরিচালনাধীন তৎকালীন ব্রাহ্ম সমাজ পরিচালিত ধর্মীয় এবং সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে যোগদান করেন। ধর্মীয় বিশ্বাসে বসুর অপরাপর সহযোগীরা ছিলেন পন্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী, উমেশচন্দ্র দত্ত, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী এবং দ্বারকানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৮৭৮ সালে নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে ব্রাহ্ম সমাজে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। এ বিষয়গুলির মধ্যে ছিল কেশবচন্দ্র সেনের নাবালিকা কন্যার সঙ্গে কুচবিহারের রাজার নাবালক পুত্রের বিয়ে। আনন্দমোহন ভিন্ন মতাবলম্বীদের নেতৃত্ব দেন এবং ‘সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ’ নামে একটি নতুন ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। এ নতুন ব্রাহ্ম সমাজের প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন তিনিই। সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজের কর্মকান্ডের ব্যবস্থাপনা এবং এর আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আনন্দমোহন একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলেন। তেরো বছর ধরে তিনি এর সভাপতি হিসেবে কাজ করেন এবং এ সময়কালে তিনি ব্রাহ্ম সমাজের জন্য কলকাতায় অনেকগুলি ব্রাহ্ম প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এর মধ্যে বিস্তৃত একটি পাকা চত্বরও (কমপ্লেক্স) ছিল। ব্রাহ্ম প্রতিষ্ঠানসমূহের ছাত্রদের শারীরিক ও নৈতিক প্রশিক্ষণের জন্য বসু তাঁর ঘনিষ্ঠতম সহযোগী পন্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রীর সহায়তায় ‘Students Weekly Service’ নামে একটি নৈতিক শিক্ষাকোর্স প্রবর্তন করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন এ বিষয়ের বক্তা।
রাজনৈতিকভাবে আনন্দমোহন বসুর দুটি উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তিনিই সর্বপ্রথম উপলব্ধি করেন যে, উপনিবেশিক পরিমন্ডলে সমাজের সর্বাপেক্ষা সচেতন শ্রেণি ছাত্রসমাজকে অবশ্যই দেশের সামাজিক এবং রাজনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে এবং সে লক্ষ্যে তাদের নিজস্ব একটি সংগঠন থাকা উচিত। বসু ১৮৭৫ সালে ‘ক্যালকাটা স্টুডেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং একে মর্যাদা দেওয়ার জন্য তিনি নিজেই এর প্রথম সভাপতি হন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বসু ১৮৭৬ সালে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন (Indian Association) নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে নতুন পথ প্রদর্শনকারী হিসেবে আর একটি অবদান রেখে যান। এর উদ্দেশ্য ছিল উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সংগঠিত করা।
আনন্দমোহনের উজ্জ্বল শিক্ষাজীবন ও শিক্ষার প্রতি গভীর অনুরাগের কারণে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৮৮২ সালে ইন্ডিয়ান এডুকেশন কমিশনের (হান্টার কমিশন) সদস্য করে। ক্রমাগতভাবে তিনি বঙ্গীয় আইন সদস্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ‘ফেলো’ মনোনীত হন। তাঁরই অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে ‘Calcutta University Act of Incorporation’ এমনভাবে সংশোধন করা হয় যাতে এটিকে কেবলমাত্র একটি পরীক্ষা গ্রহণকারী সংস্থা হতে পরীক্ষা গ্রহণকারী ও শিক্ষাদানকারী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা যায়। ১৮৯২ সালের ভারত আইনের অধীনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গীয় আইন পরিষদে একজন সদস্য নির্বাচন করার অধিকার লাভ করে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বঙ্গীয় আইন পরিষদ এর সদস্যনির্বাচিত হন আনন্দমোহন বসু। একজন জাতীয়তাবাদী হিসেবে বসু তীব্রভাবে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করেন। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর তিনি বঙ্গভঙ্গবিরোধী এক সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং রোগশয্যা হতে বিশাল জনসমাবেশে ভাষণ দেন। ১৯০৬ সালের ২০ আগস্ট আনন্দমোহন বসুর মৃত্যু হয়।
আনন্দ মোহন কলেজ সম্পর্কে বিশেষ আলোচনাঃ
১৯০৮ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত আনন্দ মোহন কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং আর্ন্তজাতিক সামরিক আদালতের অন্যতম বিচারক রাধাবিনোধ পাল ১৯১১-১৯২০ সালে এই কলেজের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, ইতিহাসবিদ প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম এবং লেখক ড. সফিউদ্দিন আনন্দমোহন কলেজে শিক্ষকতা করেন। এই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন ইতিহাসবিদ ড.নীহার রঞ্জন রায়, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, যাদুকর পি.সি সরকার, প্রফেসর মোফাখখারুল ইসলাম (সাবেক উপাচার্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), প্রফেসর মো. আনোয়ারুল ইসলাম (সাবেক উপাচার্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়), বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক ড. অরবিন্দু পোদ্দার, প্রফেসর মো. শামসুর রহমান (সাবেক উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়), বিচারপতি এম.এ রশিদ, রাহাত খান সম্পাদক দৈনিক ইত্তেফাক, যতীন সরকার বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গবেষক, কবি নির্মলেন্দু গুণ প্রমুখ গুণী ব্যক্তি।


তথ্যসুত্রঃ অত্র প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও বাংলাপিডিয়া।

আনন্দ মোহন কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস আনন্দ মোহন কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on February 07, 2019 Rating: 5

অমৃত লাল দে কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস

February 01, 2019
অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয় অথবা অমৃত লাল দে কলেজ বরিশাল শহরে অবস্থিত একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও দানবীর অমৃত লাল দে ১৯৯২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করেন।

অমৃত লাল দে সম্পর্কে ঃ
‘কর্মই ধর্ম’ অমৃত লাল দে।
ধর্ম ও কর্মের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে যিনি সকল মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান পেয়েছেন তিনি দানবীর অমৃত লাল দে।
স্বাধীনতাত্তোর বরিশালের ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব। তিনি দানবীর, সমাজসেবী, শিক্ষানুরাগী, মানব প্রেমিক হিসেবে পরিচিত। অকাতরে দানের মধ্য দিয়ে তিনি সকল সম্প্রদায়ের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা অর্জন করেছিলেন। অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য দিয়েছেন আর্থিক অনুদান।
জন্ম ও পরিচয়ঃ ১৩৩১বঙ্গাব্দের ১৩ই আষাঢ় (২৭ জুন, ১৯২৪) বর্তমান শরীয়তপুর জেলার আঙ্গারিয়া গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা রাসমোহন দে এবং মা সারদা দেবী।

শিক্ষা জীবনঃ 
অত্যন্ত সাধারণ এক পরিবারে তার জন্ম। শৈশব ও কৈশোর কাটে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে। মানুষের প্রধান আয় ছিল চাষাবাদ, মাছ ধরা এবং ছাতা সেলাইয়ের কাজ। অমৃত লাল দে’র পিতা শীতলপাটি বুননের কাজ করতেন। পড়াশুনার প্রতি ভীষণ আগ্রহ ছিল শিশু অমৃত লাল দে’র। নৌকায় বিল পাড়ি দিয়ে গ্রামের পাঠশালায় পড়াশুনা করতেন, কিন্তু পিতা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময়ই অভাবের তাড়ণায় পড়াশুনা ছাড়তে হয় তাকে।

কর্মজীবন:
বাবার অসুস্থতার কারেন নামতে হয় কঠিন জীবন সংগ্রামে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি একটি বিড়ির কারখানায় কাজ শুরু করেন। গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হত তাকে। প্রতিদিন ২/৩ মাইল হেটে কর্মস্থলে যেতেন। ১৩৫০ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে, চারদিকে হাহাকার, বুভুক্ষ মানুষের কান্না, গ্রামে কাজ নেই। এর মধ্যেই অমৃত লাল সিদ্ধান্ত নিলেন বরিশাল শহরে যাবেন। বরিশাল এসে কাজ নিলেন কালীবাড়ী রোডের একটি বিড়ির কারখানায়। এভাবেই অভাবের সাথে যুদ্ধ করে পিতা, মাতা, ভাই-বোনের সংসার চালাতে থাকেন অমৃত লাল দে। সততা ও একাগ্রতার সাথে কাজ করতে করতে জীবনে আসতে থাকে সাফল্য। ২৪ বছর বয়সে তিনি ওই বিড়ির কারখানার ম্যানেজার হন। ১৩৫৪ সালে মাত্র বারো টাকা পুঁজি নিয়ে বিড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে তাদের বিড়ির চাহিদা বাড়তে থাকে। নতুন বিড়ির নাম দেন ‘কারিকর বিড়ি’।
শুরু হল দোকানে দোকানে সরবরাহ করা। ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে লাগল। কারখানায় কারিগর রাখা হয়। কারিকর বিড়ির সুনাম ছড়িয়ে পড়ল শহরে, বন্দরে, গ্রামে। আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি অমৃত লাল দে’কে। পরিশ্রম, নিষ্ঠা, একাগ্রতা দিয়ে অভাবকে তিনি জয় করলেন। এল সাফল্য।


মানুষের সেবায় :
১৩৫০ এর দুর্ভিক্ষে অভাবী মানুষের হাহাকার তাকে করে তুলল মানবপ্রেমী, নিজের শৈশব থেকে তিনি বুঝতেন মানুষের কষ্টের কথা। কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা, টাকার অভাবে ফর্ম ফিলাপ করতে না পারা ছাত্র কেউই ফেরেনি এই মানবপ্রেমীর কাছ থেকে। তাই তো তিনি অমৃত। জীবনে সাফল্যের শিকায় পৌঁছালেন তিনি। ভাইদের পড়াশোনা শেখালেন কিন্তু জীবনের কঠিন বাস্তবতা তাকে উপলব্ধি করতে শেখাল মানুষের সেবাই পরম ধর্ম। দান করেছেন মানুষের জন্য, সমাজের জন্য। বরিশাল অঞ্চলের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, খেলাধুলাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে তার আন্তরিক সহযোগিতা।

প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান :
ছোট বেলায় অর্থাভাবে পড়াশুনা না করতে পাড়া অমৃত লাল প্রতিষ্ঠিত হয়ে হয়ে উঠলেন শিক্ষানুরাগী ।১৯৯২ সালে তিনি অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, অশ্বিনী কুমার হলের সংস্কারক, বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দান, বরিশাল রামকৃষ্ণ মিশনে চানু স্মৃতি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন, সারদা ভবন, সারদা ঘাটলা নির্মাণ, মমতাজ মজিদুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন, জগদীশ স্বরস্বতি বালিকা বিদ্যালয়ের অমৃত ভবন ও যোগমায়া ভবন নির্মাণ, কাউনিয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় নির্মাণে আর্থিক সহায়তা, বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরী নতুন ভবন নির্মাণে আর্থিক সহায়তা, মুকুলস্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে সহায়তা, বরিশাল ক্লাবে বরিশাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, সাহেবগঞ্জ নাজমুল করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে আর্থিক সহায়তা, অমৃত লাল দে কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠাসহ অসংখ্য শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও জনকল্যাণমূলক সংগঠন ও সংস্থায় মহতী কীর্তির স্বাক্ষর রেখে গেছেন। দান করেছেন বিভিন্ন মন্দির, মসজিদ, মাদ্রাসায়।

ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদান:
তারই অর্থে বরিশালে শুরু হয় ‘চানু স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’। যেখানে শ্রীলংকার সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাসহ শ্রীলংকা ও দেশের জাতীয় দলের বহু খেলোয়াড় খেলতে এসেছেন।

সাহিত্য ক্ষেত্রে অবদান:
এছাড়াও ‘বরিশালের লোকসাহিত্য’, ‘অশ্বিনী কুমার রচনা সমগ্র’, ‘আচার্য জগদীশ কথামৃত’, ‘বরিশাল ধর্মরক্ষিণী সভা কামিনী সুন্দরী চতুষ্পাঠী ঃ ইতিহাস ও বিকাশ’, ‘বাখরগঞ্জ জেলার ইতিহাস’ প্রভৃতি গ্রন্থের তিনি প্রকাশক।

শরীয়তপুর জেলায় তার অবদান: 
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়ন এর রামঠাকুর এর আশ্রমেো তিনি অর্থদান করেছেন।মৃত্যু:
১৯৯৩ সালের ১৪ জুন ক্ষণজন্মা এই মানুষটি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন। অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গনেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়েছে। অসামান্য কীর্তির মাঝে তিনি অমর হয়ে সর্বদা তাড়িত করছেন আমাদের বিবেককে। তিনি চিরদিন মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবেন।আরো জানতে: http://www.barisaltoday.com/2392http://www.voiceofbarisal.com/23804.aspx

 

তথ্যসুত্র: বাংলাদেশের লোকজন সংস্কৃতি গ্রন্থমালা, বরিশাল ও বরিশাল জেলার অনলাইন পত্রিকা।

অমৃত লাল দে কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস অমৃত লাল দে কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on February 01, 2019 Rating: 5

সরকারী দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ এর নামকরণ ইতিহাস

January 19, 2019

নামকরণঃ  ১৯৪২ সালে মানিকগঞ্জ জেলা সদরে ‘মানিকগঞ্জ কলেজ’ নামে স্থাপিত হয়। তৎকালীন জমিদার শ্রী সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায়চৌধুরীর প্রেরণা ও সহযোগিতায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন শ্রী হিমাংশুভূষণ সরকার। তখন কলেজের পাঠ্য বিষয়সমূহের মধ্যে ছিল ইংরেজি, বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি, বাণিজ্যিক ভূগোল এবং হিসাববিজ্ঞান। ১৯৪৪ সালে কলেজের নাম পরিবর্তন করা হয়। টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের ব্যবসায়ী  রণদা প্রসাদ সাহা-র পিতার নামে কলেজের নামকরণ করা হয় দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ।১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। তখন থেকে কলেজের নাম হয় সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ।


কলেজ সম্পর্কেঃ


১৯৪৭ সালে কলেজে স্নাতক শ্রেণি চালু করা হয়। ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান এবং ১৯৬৪ সালে স্নাতক শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়।


১৯৭০ সালে এ কলেজে বি.এসসি কোর্স চালু করা হয়। ১৯৭১-৭২ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান চালু করা হয়। ১৯৭৬-৭৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে কৃষি বিজ্ঞানে পাঠদান শুরু হয়। কলেজটিতে ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্মান এবং অর্থনীতি, দর্শন, ইতিহাস, ব্যবস্থাপনা ও গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হয়।


কলেজটি ২৩.৭৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। কলেজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ছাত্রাবাস ছিল। ১৯৭৫ এবং ১৯৮৮ সালে ছাত্রাবাসের কিছুটা সংস্কার ও সম্প্রসারণ ঘটে। ১৯৯৩ সালে পুরাতন বিল্ডিং ভেঙ্গে নির্মাণ করা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবন। ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় দোতলা একাডেমিক ভবন। ২০০১ সালে কলেজের জন্য একটি নতুন তিনতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ৪টি একাডেমিক ভবন, ৩টি ছাত্রাবাস, ১টি খেলার মাঠ ও ২টি পুকুর রয়েছে।


বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাশ), ১৫টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), ৭টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ১ম পর্ব ও ৮টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষপর্ব কোর্স চালু আছে।


অধ্যায়নরত  শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৭৯। ফলাফল, শিক্ষার মান এবং শিক্ষানুকূল পরিবেশের কারণে ২০০০ সালে কলেজটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়েছে।


পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা  খেলাধুলা, বিতর্ক, রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি, রোভার, গার্ল-ইন-রোভারসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ১৯৪২ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষ উর্বশী নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু করে এবং ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতো। পরবর্তীকালে বার্ষিক স্মরণিকা, রূপায়ণ এবং আবহমান নামে ৩টি ম্যাগাজিন নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।


কৃতি ছাত্রঃ


১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক ছিলেন একসময় এ কলেজের ছাত্র। শহীদ রফিকের মায়ের কবর এ কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ছাত্র আবুল কাশেম খান, গোলাম কিবরিয়া তজু, আব্দুস সাত্তার (পিন্কু), আবুল হোসেন, রতন চন্দ্র বিশ্বাস, আনছার আলী, মোঃ কফিল উদ্দিন, বিমান বিহারী সাহা প্রাণ দিয়েছেন।


তথ্যসুত্রঃ বাংলাপিডিয়া [মো আবু বকর]


সরকারী দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ এর নামকরণ ইতিহাস সরকারী দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ এর নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on January 19, 2019 Rating: 5

সরকারী গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ নামকরণ ইতিহাস

January 14, 2019
অবস্থান: শরীয়তপুর জেলাসদরে অবস্থিত।

অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টি নাম করণ করা হয়েছে এ দেশের শিল্প স্থাপনে অগ্রদূত, বিশিষ্ট শিল্পপতি জনাব গোলাম হায়দার খান এর নামে। জনাব হায়দার শরীয়তপুর সদর থানার শৌলপাড়া ইউনিয়নের সারেঙ্গা গ্রামে ১০ জানুয়ারি ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা জনাব মোজাফফর খান বিশিষ্ট সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন। জনাব গোলাম হায়দার খান শিশুকাল হতেই ব্যবসা অনুরাগী, সুউচ্চ মনোবলের অধিকারি ও আত্নসচেতন ছিলেন।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯৩৫ সালে তিনি কলকাতায় ব্যবসাতে সক্রিয়ভাবে যোগদান করেন।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন। অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি শিল্প ব্যবসায়ে আত্ননিয়োগ করেন। অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ তিতিক্ষা ও চড়াই উৎরাই পেরিয়ে তিনি এদেশে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষি।ঠত করেন। বেংগল ফ্রেন্ডস এন্ড কোং লিঃ, ফ্রেন্ডস পেপার এন্ড কোং ও মিতালী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বাঙালিদের মধ্যে শিল্প স্থাপনে তিনি ফার্ষ্ট জেনারশনের সদস্য। এদেশে শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে তাঁর প্রচুর অবদান রয়েছে। রুগ্ন শিল্পকে চালু করার ব্যাপারে তার যথার্থ পরামর্শ সরকার কাজে লাগিয়েছেন। তিনি এফবিসিসিআই এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। অত্যন্ত ধীশক্তি সম্পন্ন এ ব্যক্তির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কম থাকলেও নিজের বাস্তব অংশগ্রহনের মাধ্যমে শিল্প সংক্রান্ত সকল বিষয় তাঁর নখদর্পনে ছিল।
দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহেও তাঁর যথেষ্ঠ সুনাম ছিল। তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ হতে ধন্যবাদ পত্রও পেয়েছেন যা শিল্পপতিদের জন্য একটি অসামান্য দৃষ্টান্ত স্বরুপ। জনাব খান ব্যক্তিগত ব্যবসা উপলক্ষে এবং ট্রেড ডেলিগেশনে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দূরপ্রাচ্যের বহু দেশ সফর করেছেন।
ব্যবসা পরিচালনার সাথে সাথে জনাব গোলাম হায়দার খান সমাজকল্যান ও ধর্মীয় কর্মকান্ডে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। তিনি রোটারী ক্লাব নামে আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য ছিলেন। লায়ন্সের চক্ষু হাসপাতালে তিনি সাহায্য ও দান করেছেন। দেশের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, মসজিদে ও মাদ্রাসায় আর্থিক সাহায্য দান করেছেন। গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি ও সাহায্য প্রদান করে তাদেরকে সাবলম্বী হতে সহায়তা করেছেন। নিজ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডোমসার হাই স্কুলেও তিনি বিভিন্ন সময়ে আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছেন।
১৯৯১ ইং সালের ২৬ এপ্রিল শুক্রবার জনাব গোলাম হায়দার খান ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যু শরীয়তপুর তথা দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। জনাব গোলাম হায়দার খানের মৃত্যুর পর তাঁর নামে শরীয়তপুরে “সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ” প্রতিষ্ঠিত হয়।
সরকারী গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ নামকরণ ইতিহাস সরকারী গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on January 14, 2019 Rating: 5

বিএএফ শাহীন কলেজ (ঢাকা) নামকরণ ইতিহাস

January 06, 2019

বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকা (BAF Shaheen College Dhaka) দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।


১ মার্চ ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠানটি “শাহীন স্কুল” নামে ইংরেজি মাধ্যমে স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করে।১৯৬৭ সালে ইংরেজি মাধ্যমের পাশাপাশি বাংলা মাধ্যম চালু করা হয়। এরই মধ্যে শাহীন স্কুলকে “শাহীন উচ্চবিদ্যালয়” হিসেবে নামকরণ করা হয় এবং কয়েক বছরের মধ্যেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা কর্তৃক স্বীকৃতি পায়। ১৯৭৭-৭৮ শিক্ষাবর্ষে শাহীন উচ্চবিদ্যালয়কে উচ্চমাধ্যমিক মহাবিদ্যালয়ে উন্নীত করার উদ্দেশ্যে “বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকা” নামকরণ করা হয়। ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রি (পাস কোর্স) চালু করা হয় এবং তখন থেকে বিএএফ শাহীন কলেজ একটি ডিগ্রি কলেজ হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।  তবে ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ডিগ্রি অবলুপ্ত করা হয়। বর্তমানে কলেজটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নিয়মানুযায়ী শিশু শ্রেণি হতে  দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এখানে সহপাঠ কার্যক্রম চালু আছে। কলেজটি শিক্ষা পদ্ধতি ও শৃঙ্খলার জন্য সুপরিচিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত। ২০০৬ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও টেক্সটবুক বোর্ডের শিক্ষানীতি অনুযায়ী বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হয়। দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটি বহু প্রতিভার জন্ম দিয়েছে যাঁরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বনামধন্য হয়েছেন।


গ্রুপ ক্যাপ্টেন ভোগার ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ঘাঁটি অফিসার-ইন-কমান্ড এবং একইসাথে সিভিল এভিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সেই সময় পাকিস্তান বিমানবাহিনী, সেনাবহিনী, সিভিল এভিয়েশন এবং  PIA(Pakistan International Airlines) এর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানী ও উর্দু ভাষাভাষী। তাই ঢাকায় বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের সন্তানদের শিক্ষা সমস্যা দূর করার লক্ষ্যে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রয়োজনীয়তা সকলেই অনুভব করলেন। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (শিক্ষা পরিদপ্তর) এজেএম খলিল উল্লাহ, যিনি পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের লিংকন’স ইন হতে ব্যারিস্টার-এট-ল ডিগ্রি অর্জন করে ব্যারিস্টার খলিল উল্লাহ নামে অধিক সমাদৃত হন; স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পান। স্কুল প্রতিষ্ঠার এই কাজটি ছিল অত্যান্ত সাহসী পদক্ষেপ। এই পর্যায়ে স্কুলটির একটি সার্থক নাম নিয়ে বিপদে পড়তে হয়। অবশেষে সার্জেন্ট জাকারিয়া এগিয়ে এলেন একটি উপযুক্ত নাম নিয়ে। তিনি শাহীন নামটির প্রস্তাব দিলেন এবং তা সাথে সাথে গ্রহণযোগ্যতা পেল। “শাহীন” একটি উর্দু শব্দ যার অর্থ হচ্ছে ঈগল, যা বিমানবাহিনীর  সাথে অত্যান্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ।


তথ্যসুত্রঃ বিএএফ শাহীন কলেজ এর ওয়েবসাইট।

বিএএফ শাহীন কলেজ (ঢাকা) নামকরণ ইতিহাস বিএএফ শাহীন কলেজ (ঢাকা) নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on January 06, 2019 Rating: 5

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস

January 03, 2019

অবস্থানঃ ঢাকা থেকে তিন সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ, পদ্মা পেরুলেই ফরিদপুর,  ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ঝিলটুলিতে অবস্থিত।


নামকরণঃ ঐতিহ্যবাহী রাজেন্দ্র কলেজ, এখন যার নাম হয়েছে রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ‘রাজেন্দ্র’ নামটার মধ্যেই কেমন একটা রাজা রাজা ভাব। ব্যাকরণও তাই বলে—রাজা+ইন্দ্র! অম্বিকাচরণ মজুমদারের প্রাণান্ত প্রচেষ্টায় ফরিদপুরের বাইশরশির জমিদার রমেশ চন্দ্র রায় চৌধুরীর অর্থানুকূল্যে ১৯১৮ সালে এই কলেজের প্রতিষ্ঠালাভ হয় এবং তাঁর ইচ্ছানুযায়ী পিতা রাজেন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরীর নামানুসারে এই কলেজের নামকরণ হয় ‘রাজেন্দ্র কলেজ’।


কলেজ সম্পর্কেঃ পল্লিকবি জসীমউদ্দীন,  কথাসাহিত্যিক নরেন্দ্রনাথ মিত্র, ঔপন্যাসিক আবু ইসহাক প্রমুখ এই কলেজে পড়েছেন। একসময় বৃহত্তর ফরিদপুরে এটাই ছিল একমাত্র নামকরা কলেজ। শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে পড়তে আসতেন এখানে। এখন যুগ পাল্টেছে, অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়েছে। তবু এখনো অনেকেই দূরের পথ পাড়ি দিয়ে এখানে পড়তে আসেন।


সুত্রঃ প্রথম আলো ও জেলা তথ্য বাতায়ন ফরিদপুর।

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এর নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on January 03, 2019 Rating: 5

শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান সরকারী ডিগ্রী কলেজ

September 16, 2018
অবস্থানঃ রাজশাহী জেলার বোয়ালীয়া থানায় অবস্থিত।

নামকরণ ঃ
কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে। এ শিক্ষা মহানগরীতে বেসরকারী উদ্যোগে একটি যুগোপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এলাকার কিছু উদ্যোগী তরুণ ও কিছু শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি একত্রিত হন। এপর্যায়ে কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২৪ জুন,১৯৯৪ তারিখে প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে নামটি ছিল হাউজিং এস্টেট মহাবিদ্যালয় এবং শুভ যাত্রার শুরুটি ছিল উপশহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রায় পরিত্যাক্ত ভবনকে সংস্কার করে ক্লাশ রুমের উপযোগী করার মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান-এর ঘনিষ্ট সহচর তাঁর জীবন ও মৃত্যুর সহযাত্রী মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ স্থপতি, চার জাতীয় নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান নামে প্রতিষ্ঠিত।

কলেজ সম্পর্কেঃ
এই কলেজটি রাজশাহী মহানগরের উত্তর জনপদে শিক্ষা বিস্তারে বিশেষ প্রয়াস রাখছে। যার ফলশ্রুতিতে গত ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক কলেজটি পাঁচ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের ভিত্তি ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এলাকার উচ্চ শিক্ষা প্রসারে নব দিগন্তের সূচনা হ‘ল।
পরবর্তীতে কলেজটি নিজস্ব জমিতে স্থানান্তর হয় অর্থাৎ রাজশাহী মহানগরী উপশহর সেক্টর-১ এ ১৯৯৫ সালে স্থায়ীভাবে রাজশাহী হাউজিং এস্টেটে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ৩১.১৩ কাঠা দলিল মূলে প্রদান করা নিজস্ব জমিতে এবং কলেজের নিজস্ব ব্যয়ে নির্মিত সাত কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবনে। প্রতিষ্ঠা লগ্নে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন উপশহরের বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী এ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান ও সমাজসেবী আবুল কালাম আজাদ। উপরন্ত কলেজটির সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজশাহীর উত্তর জনপদে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের মহান প্রচেষ্টাকে সফল করার উদ্দেশ্যে সেদিন সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন উপশহর তথা রাজশাহীর প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ।
কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের প্রস্তাব ও অনুমোদনে রাজশাহী সরকারী কলেজের প্রাক্তন ইংরেজী বিভাগের সদ্য অবসর প্রাপ্ত প্রবীন অধ্যাপক ইউনুস আলীকে ০৮-০৭-১৯৯৪ তারিখে কলেজের সর্বপ্রথম অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এরপর কলেজের গভর্ণিং বডি মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ২৭-০৯-১৯৯৪ তারিখে ২৯ জন শিক্ষক ও কর্মচারীকে নিয়োগ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠা লগ্নেই মহাবিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক, বিজ্ঞান ও বানিজ্য শাখা খোলা হয়।

সুত্রঃ কলেজের নিজস্ব ওয়েবসাইট।
শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান সরকারী ডিগ্রী কলেজ শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান সরকারী ডিগ্রী কলেজ Reviewed by sm sohage on September 16, 2018 Rating: 5
Powered by Blogger.