স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন পত্রিকাঃ 'স্বাধীন বাংলা'
sm sohage
September 15, 2018
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা, সাময়িকী ও বুলেটিনের মধ্যে ছিল বিপুল বৈচিত্র্য। এর কোনোটি নিয়মিত, কোনোটি অনিয়মিতভাবে প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশের পরম্পরায় এগুলোর মধ্যে দৈনিক, সাপ্তাহিক, অর্ধ-সাপ্তাহিক, পাক্ষিক থাকলেও সব ক্ষেত্রে যে সেই সময় মেনে চলা হয়েছে, এমনটি দেখা যায়নি। এমন পত্রিকাও রয়েছে, 'দৈনিক' হিসেবে প্রকাশের পর একটি সংখ্যার বেশি আর প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। কোনো কোনো পত্রিকা ছাপাখানায় প্রকাশ হয়েছে বটে, অনেক পত্রিকা প্রকাশ হয়েছে সাইক্লোস্টাইল মেশিনে। কোনো কোনোটি স্রেফ হাতে লিখে। এ ক্ষেত্রে যে অমানুষিক শ্রম ও ধৈর্য প্রয়োজন হতো, স্বাধীনতার জন্য তা অম্লান বদনে দিয়ে গেছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত কলমযোদ্ধারা। বৈচিত্র্য ছিল দামের মধ্যেও। তবে সব বৈচিত্র্য ছাপিয়ে ঐক্যের যে সুরটি এসব সংবাদপত্রের মধ্যে ছিল, তা হচ্ছে নামকরণে মুক্তিকামী মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। যে কারণে একই নামে একাধিক পত্রিকা দেখা গেছে। বিশেষত জয় বাংলা, বাংলাদেশ, বাংলা, মুক্তি, রণাঙ্গন, বিপ্লব, স্বাধীনতাসংশ্লিষ্ট শব্দের প্রতি আকর্ষণ ছিল বেশি।
দেখা যাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধকালে 'স্বাধীন বাংলা' নামেই ছয়টি পত্রিকা প্রকাশ হয়। নোয়াখালীর চৌমুহনী থেকে প্রকাশিত এর প্রথমটি ইতিহাস হয়ে আছে সময়ের বিচারে। যদিও মাত্র কয়েকটি সংখ্যা প্রকাশ হয়েছিল, এর প্রকাশকাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ_ ২৬ মার্চ। ২৫ মার্চের কালরাতের পরই, যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তখন মফস্বলের একটি জনপদ থেকে স্বাধীন বাংলা নামে দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ সত্যিই ইতিহাসের বিস্ময়। এর সম্পাদক ছিলেন আ.ম.ম. আনোয়ার। ১৮ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চৌমুহনী দখল করার আগ পর্যন্ত পত্রিকাটি প্রকাশ হয়।
অন্যগুলোর মধ্যে একটি 'স্বাধীন বাংলা' প্রকাশ হয় চট্টগ্রাম বিভাগের কোনো অঞ্চল থেকে। বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির 'পূর্ব্ব বাংলা সমন্বয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগ' থেকে প্রকাশিত এই পত্রিকায় সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রকাশনা দফতরের নাম থাকত না। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪, মূল্য ছিল ১০ পয়সা। মুক্তিযুদ্ধকালেও এই সংবাদপত্রে 'আমেরিকান চক্রান্ত পরাজিত :জাতিসংঘে চীনের আসন দখল' ধরনের সংবাদ পরিবেশনা লক্ষণীয় ও কৌতূহল উদ্দীপক। সরকার কবীর খান সম্পাদিত 'স্বাধীন বাংলা' কোথা থেকে প্রকাশ হতো, জানা যায় না। 'বাংলা দেশ মুক্তি সংস্থা (উত্তর-পূর্ব এলাকা) কর্তৃক অনুমোদিত' লেখা থাকত শেষ পৃষ্ঠার নিচে। দাম ছিল ১০ পয়সা। এ ছাড়া বিস্তারিত জানা যায় না।
জাতীয় নেতা এএইচএম কামরুজ্জামানের স্ত্রী মিসেস জাহানারা কামরুজ্জামানের সম্পাদনায় জামালগঞ্জ, রাজশাহী থেকে প্রকাশ হতো আরেকটি 'স্বাধীন বাংলা'। তবে তিনি ছিলেন 'প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদিকা'। সম্পাদক হিসেবে এসএ আল মাহমুদের নাম ছাপা হতো। উপদেষ্টা হিসেবে 'এএইচএম কামরুজ্জামান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশ সরকার' লেখা থাকত।
এর বাইরে আরেকটি 'স্বাধীন বাংলা' প্রকাশ হতো 'মুজিবনগর' থেকে। এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন খোন্দকার শামসুল আলম দুদু। মূল্য ছিল ১৫ পয়সা। কাজী জাফর ও মেনন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় বামপন্থি বিপ্লবীদের ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ হতো 'স্বাধীন বাংলা' নামে আরেকটি পত্রিকা। প্রথম প্রকাশ হয় ১৫ অক্টোবর। এটি প্রকাশের সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় না। পত্রিকাটি মুক্তিযুদ্ধকে 'জনযুদ্ধে' রূপান্তরের পক্ষপাতী ছিল এবং এ সংক্রান্ত মতামত ও বিশ্লেষণ বেশি প্রকাশ হতো। তবে ২৫ অক্টোবর যখন পত্রিকাটি প্রকাশ হয়, ততদিনে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি নির্ধারিত হয়ে গেছে।
তথ্যসুত্রঃ দৈনিক সমকাল অনলাইন।
দেখা যাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধকালে 'স্বাধীন বাংলা' নামেই ছয়টি পত্রিকা প্রকাশ হয়। নোয়াখালীর চৌমুহনী থেকে প্রকাশিত এর প্রথমটি ইতিহাস হয়ে আছে সময়ের বিচারে। যদিও মাত্র কয়েকটি সংখ্যা প্রকাশ হয়েছিল, এর প্রকাশকাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ_ ২৬ মার্চ। ২৫ মার্চের কালরাতের পরই, যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তখন মফস্বলের একটি জনপদ থেকে স্বাধীন বাংলা নামে দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ সত্যিই ইতিহাসের বিস্ময়। এর সম্পাদক ছিলেন আ.ম.ম. আনোয়ার। ১৮ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চৌমুহনী দখল করার আগ পর্যন্ত পত্রিকাটি প্রকাশ হয়।
অন্যগুলোর মধ্যে একটি 'স্বাধীন বাংলা' প্রকাশ হয় চট্টগ্রাম বিভাগের কোনো অঞ্চল থেকে। বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির 'পূর্ব্ব বাংলা সমন্বয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগ' থেকে প্রকাশিত এই পত্রিকায় সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রকাশনা দফতরের নাম থাকত না। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪, মূল্য ছিল ১০ পয়সা। মুক্তিযুদ্ধকালেও এই সংবাদপত্রে 'আমেরিকান চক্রান্ত পরাজিত :জাতিসংঘে চীনের আসন দখল' ধরনের সংবাদ পরিবেশনা লক্ষণীয় ও কৌতূহল উদ্দীপক। সরকার কবীর খান সম্পাদিত 'স্বাধীন বাংলা' কোথা থেকে প্রকাশ হতো, জানা যায় না। 'বাংলা দেশ মুক্তি সংস্থা (উত্তর-পূর্ব এলাকা) কর্তৃক অনুমোদিত' লেখা থাকত শেষ পৃষ্ঠার নিচে। দাম ছিল ১০ পয়সা। এ ছাড়া বিস্তারিত জানা যায় না।
জাতীয় নেতা এএইচএম কামরুজ্জামানের স্ত্রী মিসেস জাহানারা কামরুজ্জামানের সম্পাদনায় জামালগঞ্জ, রাজশাহী থেকে প্রকাশ হতো আরেকটি 'স্বাধীন বাংলা'। তবে তিনি ছিলেন 'প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদিকা'। সম্পাদক হিসেবে এসএ আল মাহমুদের নাম ছাপা হতো। উপদেষ্টা হিসেবে 'এএইচএম কামরুজ্জামান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশ সরকার' লেখা থাকত।
এর বাইরে আরেকটি 'স্বাধীন বাংলা' প্রকাশ হতো 'মুজিবনগর' থেকে। এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন খোন্দকার শামসুল আলম দুদু। মূল্য ছিল ১৫ পয়সা। কাজী জাফর ও মেনন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় বামপন্থি বিপ্লবীদের ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ হতো 'স্বাধীন বাংলা' নামে আরেকটি পত্রিকা। প্রথম প্রকাশ হয় ১৫ অক্টোবর। এটি প্রকাশের সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় না। পত্রিকাটি মুক্তিযুদ্ধকে 'জনযুদ্ধে' রূপান্তরের পক্ষপাতী ছিল এবং এ সংক্রান্ত মতামত ও বিশ্লেষণ বেশি প্রকাশ হতো। তবে ২৫ অক্টোবর যখন পত্রিকাটি প্রকাশ হয়, ততদিনে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি নির্ধারিত হয়ে গেছে।
তথ্যসুত্রঃ দৈনিক সমকাল অনলাইন।
স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন পত্রিকাঃ 'স্বাধীন বাংলা'
Reviewed by sm sohage
on
September 15, 2018
Rating: