Results for জেলা ও উপজেলা নামকরণ

মেহেরপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

August 01, 2018

মেহেরপুর নামকরণ সম্পর্কে এ পর্যন্ত দুটি অনুমানসিদ্ধ তথ্য আমরা জানা যায়। একটি হচ্ছে ইসলাম প্রচারক দরবেশ মেহের আলী নামীয় জনৈক ব্যক্তির নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ষোড়শ শতকের অথরা তার কিছুকাল পরে মেহেরপুর নামকরণের সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলে মুসলিম শাসনের সূত্রপাত হতেই ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু হয়েছিল। বৃহত্তর কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বারোবাজার, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর সহ প্রভৃতি অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচার শুরু করেন হযরত খাঁন জাহান আলী (রাঃ)। পীর খান জাহান আলী গৌড় থেকে ভৈরব নদী পথে মেহেরপুর হয়ে বারোবাজার গিয়ে বাগেরহাট গিয়েছিলেন। তার সাথে সেই সময়ে ৩৬০ জন দরবেশ ও ৬০ হাজার সৈন্য ছিল বলে কথিত আছে। তিনি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চরে ইসলামের বিজয় পতাকা উত্তোলন করে জনবসতি ও শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন। এ অঞ্চলে ঐ একই সময়েই বেশ কয়েকজন ইসলামের ঝান্ডাবাহক আল্লাহর পরম আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তিত্বের আগমন ঘটে। শাহ ভালাই, শাহ আলাই ও এনায়েত উল্লাহর নাম উল্লেখযোগ্য। পুণ্য আত্না ইসলামের ঝান্ডাবাহক দরবেশ মেহের আলী শাহ-এর নামের সাথে সঙ্গতি রেখে মেহেরপুর নামকরণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যতদূর জানা যায় তাতে মেহের আলী অত্যন্ত প্রভাবশালী খ্যাতিমান আধ্যাত্নিক ব্যক্তি হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। যার ফলে তাঁর নামের প্রাধান্য পেয়ে যায়। মেহেরপুর নামকরণের উৎপত্তি সম্পর্কে দ্বিতীয় দিকটি এখানে উল্লেখ্য, পূর্ববঙ্গ রেলওয়ের বাংলায় ভ্রমণ গ্রন্থে বিখ্যাত বচনকার মিহির ও তাঁর নিজের পুত্রবধু খনা (খনার বচন বিখ্যাত) ভৈরব নদীর তীরস্থ এ অঞ্চলে বাস করতেন। তার নামানুসারে প্রথমে মিহিরপুর এবং পরবর্তীতে অপভ্রংশে মেহেরপুর নামকরণ হয়েছে বলে অনুমান করা হয়।


মেহেরপুর জেলার উপজেলা সমুহঃ  মুজিবনগর, মেহেরপুর সদর, গাংনী।

মুজিবনগর উপজেলা
মুজিবনগর  এর  পুর্ব  নাম বৈদ্যনাথতলা। উপজেলার নামকরণে  সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে জানা যায় যে ১৯৭১ সনে  মুক্তিযুদ্ধের  সময়  প্রসিদ্ধ  বৈদ্যনাথতলা  আম্র কাননে   বাংলাদেশের অস্থায়ী  সরকারের  হেডকোয়াটার্স স্থাপিত হয়  এবং ১৭ এপ্রিল    স্থলেই  অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু  শেখ  মুজিবুর  রহমানকে  অস্থায়ী সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি  ঘোষণা করা হয়। ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নামের  সাথে মিল রেখে এ স্থানের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। 
গাংনী উপজেলা
গাংনী নামের সাথে যুক্ত হয়ে আছে এ অঞ্চলের ভৌগলিক পরিবেশের পরিচয়। গাংনী পদটিই এখানে প্রধান। নদী বা নদীর মৃতপ্র
ায় ধারাকে এ এলাকার মানুষ গাং বা গাঙ বলে। অনুমান করা হয় যে, গাঙ্গেয় অববাহিকার এ এলাকায় প্রথম বসতি স্থাপনকারী মানুষেরা অন্যদের বসবাসে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ‘এ এলাকায় গাং অর্থাৎ নদী নেই’- এমন ঘোষণা দেয়। ‘গাং নেই’পরবর্তীতে হয়ে যায়- ‘গাংনী’।  এ এলাকার মানুষেরা নেই বুঝাতে ‘নি’উচ্চারণ করে। গাংনী নামকরণে ভিন্ন আর একটি যুক্তিও পাওয়া যায়। পশ্চিমে কাজলা নদী এবং পূর্বে মাথাভাঙ্গা নদীর মধ্যবর্তী দোয়ার অঞ্চলে এ থানার অবস্থান। সেই অর্থে এ নদীর প্রধান উৎস গঙ্গা। গঙ্গার কন্যা মনে করার কারণে খরস্রোতা মাথাভাঙ্গাকে একসময় এ এলাকার মানুষ ‘গাংগীনি’ বলে ডাকত। গাংগীনি থেকে গাঙ্গনী বা গাংনী শব্দের উৎপত্তি।  গাংনী নামকরণে মুলতঃ এ অঞ্চলের নদী সম্পৃক্ততার পরিচয় ফুটে উঠেছে।


মেহেরপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস মেহেরপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

মানিকগঞ্জ জেলা ও এর উপজেলা সমুহের নামকরণ ইতিহাস

August 01, 2018

মূরত সংস্কৃত ‘মানিক্য’ শব্দ থেকে মানিক শব্দটি এসেছে। মানিক হচ্ছে চুনি পদ্মরাগ। গঞ্জ শব্দটি ফরাসী। মানিকগঞ্জের নামের ঋৎপত্তি ইতিহাস আজও রহস্যবৃত। অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে সুফি দরবেশ মানিক শাহ সিংগাইর উপজেলার মানিকনগরে আসেন এবং খানকা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন।কারও মতে দূর্ধর্ষ পাঠান সর্দার মানিক ঢালীর নামানুসারে মানিকগঞ্জ নামের উৎপত্তি। আবার কারো মতে, নবাব সিরাজ উদ-দৌলার বিশাবাস ঘাতক মানিক চাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তার নমানুসারে ১৮৪৫ সালের মে মাসে মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ হয়। মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ সম্পর্কীত উল্লেখ্য তিনটি পৃথক স্থানীয় জনশ্রুতি এবং অনুমান নির্ভর। এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি, তবে মানিক শাহের নামানুসারে মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ সম্পর্কীত জনশ্রুতি এবং ঘটনা প্রবাহ থেকে যে চিত্র পাওয়া যায় তাই সঠিক বলে ধরা হয়।
মানিকগঞ্জ জেলার উপজেলা সমুহঃ হরিরামপুর, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ সদর, ঘিওর, শিবালয়, দৌলতপুর, সিংগাইর।
হরিরামপুর উপজেলাঃ
জনশ্রুতি আছে, প্রায় দুশো বছর পূর্বে সম্ভ্রান্ত ও প্রভাবশালী শ্রী হরিশচন্দ্র রায় এ অঞ্চলে বাস করতেন। অনেকের মতে হরিশচন্দ্রের নামানুসারে জনপদের নাম হয় হরিরামপুর।
সাটুরিয়া উপজেলাঃ
সাটুরিয়ার নামকরণ সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
ঘিওর উপজেলাঃ
কিংবদন্তীতে রয়েছে, এ অঞ্চল খাঁটি ঘি-এর জন্য সুপ্রসিদ্ধ ছিল। অনেকে মনে করেন এ্ ঘি শব্দ হতে ঘিওর নামের উদ্ভব। প্রথমে ঘিওর ছিল একটি মৌজার নাম, এখানে থানা সদর স্থাপিত হলে থানার নামকরণ হয় মৌজার নামে ঘিওর।
শিবালয় উপজেলা
শিবালয় উপজেলার নামকরনের ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, অত্র এলাকায় মহাদেব শিবের আলয় (মন্দির) অবস্থিত ছিল।  শিব+আলয়= শিবালয়, এই নামে অত্র এলাকায় একটি মৌজা ছিল। উক্ত শিব মন্দিরের (আলয়) নাম অনুসারে উক্ত মৌজার নাম শিবালয় করা হয়।
দৌলতপুর উপজেলাঃ
দৌলতপুরের পূর্ব নাম ছিল গোবিন্দগঞ্জ।এটি ছিল একটি বর্ধিঞ্চু গ্রাম এবং এই গ্রাম গিরি-গোবিন্দ মুর্তির জন্য ব্যিখাত ছিল। এই গিরি গোবিন্দ মুর্তির জন্য নাম হয় গোবিন্দপুর। পরবর্তীতে দরবেশ দৌলতকাজীর নামানুসারে নাম দৌলতপুর রাখা হয়। দরবেশ দৌলতগাজী মুসলমান শাসনামলে এই অঞ্চলে আগমন করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে।
সিংগাইর উপজেলাঃ
এ উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।  

মানিকগঞ্জ জেলা ও এর উপজেলা সমুহের নামকরণ ইতিহাস মানিকগঞ্জ জেলা ও এর উপজেলা সমুহের নামকরণ ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

মাদারীপুর জেলা ও এর উপজেলা সমুহের নামকরণের ইতিহাস

August 01, 2018
পঞ্চদশ শতাব্দীর সুফি সাধক হযরত বদিউদ্দীন জিন্দা শাহ মাদার (রঃ) এর নাম অনুসারে মাদারিপুর জেলার নামকরণ করা হয়।


মাদারীপুর জেলার উপজেলা সমুহঃ  মাদারীপুর সদর, শিবচর, কালকিনি, রাজৈর।


শিবচর উপজেলাঃ 
শিব শংকর নামের একজন ধার্মিক ব্যক্তি ওই এলাকায় প্রসিদ্ধ ব্রাক্ষ্মণ ছিলেন।  তার নামানুসারে শিবচর নামকরণ হয়ে থাকতে পারে।

কালকিনি উপজেলাঃ

এর নামকরণের সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি।  থানা প্রতিষ্ঠার সময় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মি. কালকোনি। সম্ভবত তারই নামানুসারে কালকিনি উপজেলার নামকরণ করা হয়।  

রাজৈর উপজেলাঃ
রাজৈর হয়ে একটি খাল প্রাচীন কালে কোটালীপাড়ায় সামুদ্রিক বন্দরের সাথে সংযুক্ত হয়। সেই খালের নাম সেন খাল। ইংরেজ আমলে নীল চাষের জন্য তারা কুটির নির্মাণ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মগদের অত্যাচারে এ অঞ্চল জনশূন্য হয় এবং বন জঙ্গলে পরিণত হয়। উজনীর রাজাদের নিকট হতে ফতেজঙ্গপুর পরগনার জমিদারিত্ব প্রাপ্ত হয় রাজা রাম রায়। রাজা রাম রায় রাজ কর্মচারীরা ঐতি মোহনায় তাদের আস্তানা গড়ে। এখানেই এ অঞ্চলের পূর্বাপর রাজাদের বিশ্রাম এর স্থান হিসাবে এ অঞ্চলের নামকরণ করা হয় রাজৈর।




তথ্যসুত্রঃ জেলা তথ্য বাতায়ন ও বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা : মাদারীপুর (বাংলা একাডেমী)।

মাদারীপুর জেলা ও এর উপজেলা সমুহের নামকরণের ইতিহাস মাদারীপুর জেলা ও এর উপজেলা সমুহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

লক্ষ্মীপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

August 01, 2018

লক্ষ্মীপুর নামকরণ হয়েছে তা নিয়ে কয়েকটি মতপ্রচলিত রয়েছে। লক্ষ্মী, ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্যের দেবী (দূর্গা কন্যা ও বিষ্ণু পত্মী) এবং পুর হলো শহর বা নগর। এ হিসাবে লক্ষ্মীপুর এর সাধারণ অর্থ দাঁড়ায় সম্পদ সমৃদ্ধ শহর বা সৌভাগ্যের নগরী। ঐতিহাসিক কৈলাশ চন্দ্র সিংহ রাজমালা বা ‘ত্রিপুরার ইতিহাস লিখতে গিয়ে তৎকালীন নোয়াখালীর পরগণা ও মহালগুলোর নাম উল্লেখ করেছেন। এতে দেখা যায়, বাঞ্চানগর ও সমসেরাবাদ মৌজার পশ্চিমে ‘লক্ষ্মীপুর নামে একটি মৌজা ছিল। আজকের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর মৌজাই তৎকালীন লক্ষ্মীপুর মৌজা। আবার অন্যমতে, সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহ সুজা আরাকান পলায়নের সময় ১৬২০ খ্রিস্টাব্দের ৬ মে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি ধাপা ও শ্রীপুর হয়ে ৯ মে ‘লক্ষ্মীদাহ পরগনা ত্যাগ করে ভূলুয়া দূর্গের ৮ মাইলের মধ্যে আসেন। ১২ মে ভূলুয়া দূর্গ জয় করতে না পেরে আরাকান চলে যান। সেই লক্ষ্মীদাহ পরগনা থেকে লক্ষ্মীপুর নামকরণ করা হয়েছে বলে কেউ কেউ ধারণ করেন। লক্ষ্মীপুর শহরের পূর্ব পাশে শাহ সুজার নামানুসারে একটি সড়কের নামকরণ করা হয় ‘সুজা বাদশা সড়ক।  বিখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক সানা উল্লাহ নূরী ‘সুজা বাদশা সড়ক নামে একটি ইতিহাস গ্রন্থও রচনা করেছেন। ১৬১৪ খ্রিস্টাব্দে মগ ও ফিরিংগীদের মিলিত বাহিনী ভূলুয়া, ভবানীগঞ্জ ও ইসলামাবাদ আগুন দিয়ে পুড়ে দেয়। স্যার যদুনাথ সরকার এ সংক্রান্ত বর্ণনায় লিখেছেন, ইসলামাবাদ চাটগাঁ শহর নয়। ভূলুয়ার পশ্চিমে একটি দূর্গ সমৃদ্ধ শহর। ঐতিহাসিক ড. বোরাহ ইসলামাবাদকে লক্ষ্মীপুর বলে ধারণা করেছেন। এভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তৎকালীন লক্ষ্মীপুর মৌজার অংশ মেঘনা পাড়ের দুর্গ সমৃদ্ধ কামানখোলাই ইসলামাবাদ নামের মগ ও ফিরিংগীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল। শ্রী সুরেশ চন্দ্রনাথ মুজমদার ‘রাজপুরুষ যোগীবংশ নামক গবেষনামূলক গ্রন্থে লিখেছেন দালাল বাজারের জমিদার রাজা গৌর কিশোর রায় চৌধুরী ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী থেকে রাজা উপাধি পেয়েছেন। তাঁর পূর্বপুরুষরা ১৬২৯-১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দালাল বাজার আসেন। তাঁর বংশের প্রথম পুরুষের নাম লক্ষ্মী নারায়ন রায় (বৈষ্ণব) এবং রাজা গৌর কিশোরের স্ত্রীর নাম লক্ষ্মী প্রিয়া।  অনেক ঐতিহাসিকের মতে, লক্ষ্মী নারায়ন রায় বা লক্ষ্মী প্রিয়ার নাম অনুসারে লক্ষ্মীপুরের নামকরণ করা হয়।

কমলনগর উপজেলাঃ

এ উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। 

রায়
পুর উপজেলাঃ
এ উপজেলার নামকরণ নিয়ে তিনটি ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার ভাটটুরিয়ার দেবীকোটের রাজ পরিবারের ভ্রাতৃকলহে বানরাজা এ অঞ্চলে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বানরাজা ‘দেবীকোট থেকে আসায় দেবীকোটের নামানুসারে কালক্রমে দেবীকোট থেকে আজকের দেবিদ্বারের নামকরণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভিন্ন কথাও রয়েছে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে বৃটিশ শাসনামলে বৃটিশ ক্যাপ্টেন জন ডেভিড ত্রীপুরার চিতনা নামক স্থান থেকে একটি নৌবহর নিয়ে গোমতী নদী পথে ঢাকা যাওয়ার সময় বর্তমান রায়পুরের ভিংলাবাড়ি নামক স্থানে বানরাজার সৈন্যদের সাথে ক্যাপ্টেন ডেভিড তার সৈন্যদের নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় এ যুদ্ধের নাম ডেভিড ওয়ার (ডেভিড যুদ্ধ) নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ওই নামানুসারে ডেভিড ওয়ার থেকে আজকের রায়পুর নামে পরিচিতি লাভ করে।
রামগতি উপজেলাঃ
বিভিন্ন জ্ঞানী প্রবীণ  এবং বিভিন্ন সূত্র মতে বর্তমান মেঘান নদীর উপকূলীয় উপজেলা রামগত নামক স্থানে রামকৃষ্ণ নামের এক ব্যক্তির আড়ৎ বা গদি ছিল। ক্রমে এই স্থানটি রামের গদি নামে পরিচিত হতে থাকে। পরবর্তীতে রামের গদি নামটি বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় রামগতি হিসাবে রূপান্তরিত হয়। রামগতি থানা বড়খেরী ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে নদী ভাঙ্গন জনিত কারণে ১৯৮২ সালে বর্তমান স্থানে স্থানান্তরতি করা হয়।
রামগঞ্জ ‍উপজেলাঃ
রাম নামক একজন প্রভাবশালী স্থানীয় ধর্মীয় নেতার নামানুসারে রামগঞ্জের নামকরন করা হয়। 








লক্ষ্মীপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস লক্ষ্মীপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

কুড়িগ্রাম জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

August 01, 2018
কুড়িগ্রাম জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস কুড়িগ্রাম জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

খাগড়াছড়ি জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

August 01, 2018

১৮৬০ সালে রেম্নচাই চৌধুরী এই শহরে গোড়াপত্তন করেন। খাগড়াছড়ি জেলার নামকরণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে একটিতথ্য জানা যায়, জেলার প্রধান কার্যালয়টি অসংখ্য খাগড়া গাছে পরিপূর্ণ চেংড়িস্ট্রিম বা চেংগী স্ট্রিম বা ছাড়ার তীরে ছিল।এই খাগরা গাছের নাম থেকে খাগড়া আর ছড়ার থেকে ছড়ি শব্দটি যুক্ত হয়ে খাগড়াছড়ি।

খাগড়াছড়ি জেলার উপজেলা সমুহঃ  খাগড়াছড়ি সদর, দিঘীনালা, পানছড়ি, লক্ষীছড়ি, মহালছড়ি, মানিকছড়ি, রামগড়, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা।

দীঘিনালা উপজেলা
দীঘিনালা-বাবুছড়া রোডের বড়াদম এলাকায় ১৬শ শতাব্দীতে তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজ এলাকাবাসীর সুপেয় পানির উৎস্যের জন্য একটি দীঘি খনন করেন।  চতুর্দিকের অসংখ্য নালা এবং এই দীঘির কারনেই দীঘিনালা নামের উৎপত্তি বলে জানা যায়।
পানছড়ি উপজেলা
জন শ্রুতি আছে এখানে এক সময় প্রচুর পান চাষ হতো।  পান চাষের এলাকা হিসাবে এটি তখনকার সময় পানছড়ি নাম ধারণ করে বলে জানা যায়।
লক্ষীছড়ি উপজেলা
এ উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে তেমন কিছু জানা না গেলেও ছড়ি শব্দের অর্থ প্রভাবিত হওয়া বুঝানো হয় এবং লক্ষীছড়ি উপজেলা সদরে লক্ষী পূজার প্রচলন ছিল বলেও এ থেকে নামকরণ করা হয়ে  থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।  এ ছাড়া উপজেলা সদরে অবস্থিত লক্ষীছড়ি মেৌজার নামানুসারেও উপজেলার নাম লক্ষীছড়ি হয়ে থাকতে পারে।
মহালছড়ি উপজেলা
মহালছড়ি থানার নামকরন সম্পর্কে স্থানীয়ভাবে দুটি অভিমত রয়েছে। প্রথমটি হলো: অতীতে ত্রিপুরা রাজন্যবর্গের রাজত্বকালে এ অঞ্চলের রাজস্ব আদায়ের জন্য একটি মহাল স্থাপিত হয়েছিল।ত্রিপুরা ভাষায় রাজস্ব আদায়ের অফিসকে মহাল বলা হয়।  এ মহাল থেকে মহালছড়ি নামের উৎপত্তি।

মানিকছড়ি উপজেলাঃ
কিংবদন্তী থেকে জানা যায়, অতীতে এই অঞ্চলের একটি পাহাড়ি খালে (ছড়া) মাণিক পাওয়া যেতো।  এই মানিক ছড়ি মিলে এখানকার নাম হয়েছে মানিকছড়ি।
রামগড় উপজেলাঃ
পূর্বে রামগড় পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি মহকুমা ছিল। কথিত আছে, এক সময় এখানে রামসাধু নামে এক সন্নাসী এখানকার একটি কুড়েঘরে বাস করতেন। মনে করা হয়,  রাম ও ঘর শব্দ দুটি থেকে কালক্রমে এই জায়গার নাম রাঘর > রামগড়। আবার স্থানীয় ইতিহাসবিদদের মতে, জনৈক রামচন্দ্র নারায়ণের নির্মিত গড়ের নামানুসারে এই অঞ্চলের নাম রামগড় হয়েছে।
মাটিরাঙ্গা উপজেলাঃ
সাধারণভাবে ধারনা করা হয়, এই অঞ্চলের মাটি রক্তিম বর্ণের অর্থাৎ রাঙ্গা। এই রাঙা বর্ণের মাটির কারণ এই জায়গাকে মাটিরাঙা বলে অভিহিত করা হয়।
গুইমারা উপজেলাঃ
গুইমারা উপজেলার নামকরণ বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।


খাগড়াছড়ি জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস খাগড়াছড়ি জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

ঝালকাঠী এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস

August 01, 2018
জেলার নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ জেলার জেলে সম্প্রদায়ের ইতিহাস। মধ্যযুগ-পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা, সুগন্ধা, ধানসিঁড়ি আর বিষখালী নদীর তীরবর্তী এলাকায় জেলেরা বসতি স্থাপন করে। এর প্রাচীন নাম ছিল ‘মহারাজগঞ্জ’। মহারাজগঞ্জের ভূ-স্বামী শ্রী কৈলাশ চন্দ্র জমিদারি বৈঠক সম্পাদন করতেন এবং পরবর্তীতে তিনি এ স্থানটিতে এক গঞ্জ বা বাজার নির্মাণ করেন। এ গঞ্জে জেলেরা জালের কাঠি বিক্রি করত। এ জালের কাঠি থেকে পর্যায়ক্রমে ঝালকাঠি নামকরণ করা হয় বলে ধারণা করা হয়। জানা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে জেলেরা এখানে মাছ শিকারের জন্য আসত এবং যাযাবরের মতো সুগন্ধা নদীর তীরে বাস করত। এ অঞ্চলের জেলেদের পেশাগত পরিচিতিকে বলা হতো ‘ঝালো’। এরপর জেলেরা বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে এখানে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তোলে। এভাবেই জেলে থেকে ঝালো এবং জঙ্গল কেটে বসতি গড়ে তোলার কারণে কাটি শব্দের প্রচলন হয়ে ঝালকাটি শব্দের উৎপত্তি হয়।  পরবর্তীকালে ঝালকাটি রূপান্তরিত হয় ঝালকাঠিতে।
ঝালকাঠী জেলার উপজেলা সমুহঃ ঝালকাঠি সদর, কাঠালিয়া, নলছিটি, রাজাপুর।
কাঠালিয়া উপজেলা
বৃটিশ শাসন আমলে কাঠালিয়ায় বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠালের হাট বসতো। তাই এর নামকরণ করা হয় কাঠালিয়া। তবে নামকরণ নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। অনেকে মনে করেন এ এলাকায় কাঠ সংগ্রহ করতে বিভিন্ন জায়গা হতে কাঠুরিয়ারারা আসত, কাঠুরিয়া হতে এ এলাকার নাম কাঠালিয়া হয়েছে। এছাড়া এ এলাকার বিভিন্ন খাল-বিল ও নদীতে প্রাপ্ত হলদে ডিমওয়ালা কাঠালি চিংড়ি হতে কাঠালিয়া উপজেলার নামকরন হয়েছে বলে অনেক প্রবিন ব্যক্তি মনে করেন।
নলছিটি উপজেলাঃ   
এর নামকরণ সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
রাজাপুর উপজেলা
গৌর সুলতানের আমলে চন্দ্রদ্বীপের দক্ষিন অঞ্চল দুই পাঠানসরদার শাসন করতেন।  তাদের একজনের নাম ছিল রেজা  খান, রেজা খান এ অঞ্চলের প্রধান ছিলেন।  ১৯২০ সালে রেজা খান এ অঞ্চলে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেন।তার নামানুসারে এ স্থানের  নাম রাখা হয় রয়েজা পুর।  পরবর্তীতে  রয়েজাপুর রাজাপুর নাম ধারন করে।

ঝালকাঠী এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস ঝালকাঠী এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

জামালপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস

August 01, 2018

ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়,  দিল্লির সম্রাট আকবরের  রাজত্বকালে (১৫৫৬-১৬০৫) হযরত শাহ জামাল (রহ.) নামে একজন ধর্মপ্রচারক ইয়েমেনে থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ২০০ জন অনুসারী নিয়ে এ অঞ্চলে এসেছিলেন।  পরবর্তীতে ধর্মীয় নেতা হিসাবে তিনি দ্রুত প্রাধান্য বিস্তার লাভ করেন।  ধারণা করা হয়, শাহ জামাল-এর নামানুসারে এই শহরের নামকরণ হয় জামালপুর।  
জামালপুর জেলার উপজেলা সমুহঃ  জামালপুর সদর, মেলান্দহ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ, বকশীগঞ্জ।
মেলান্দহ উপজেলাঃ
এই উপজেলার নামকরণ নিয়ে যেটুকু শোনা যায় সেটা হচ্ছে : এর পূর্ব নাম মিলন দহ।  আবার কেউ কেউ বলেন যে মেলা দহের মিলনে এই জনপদ।  তাই এর নাম মেলা দহ।  তবে মেলান্দহে  প্রাচীণ একটি গ্রন্থাগার ছিল তার নাম ছিল মিলন মন্দির । মিলন মন্দিরটি ছিল বর্তমান মেলান্দহ বাজার সংলগ্ন কেন্দ্রীয়ঁ শ্রী শ্রী কালী মাতার মন্দির প্রাঙ্গনে অর্থাৎ মেলান্দহ কেন্দ্রীয় মসজিদ -এর দক্ষিণ পার্শে অবস্থিত ছিল বৃটিশ শাসনপূর্ব সময়কাল থেকেই। আবার বৃটিশ শাসন আমলের শেষ সময়ে অর্থৎ চারদশকের মাঝামাঝি সময়েই ধংশ হয়ে গেছে বৃটিশ নিপিড়ণ অত্যাচারে। বহু (মেলা/অনেক) দহ/বিলের মিলনে চর জেগে ওঠা এই স্থল ভূমি। তাই এর নাম মিলনদহ। জনশ্রুতিতে মিলন দহ :মেলা দহ  তারপর মেলান্দহ -তে এসে ঠেকেছে। একটি দুটি বাড়ী তারপর গ্রাম।  গ্রাম থেকে গ্রামের বিস্তার। তারপর থানা।  থানা থেকে উপজেলা।  বর্তমানের মেলান্দহ উপজেলা।
ইসলামপুর উপজেলাঃ
ইসলামপুর উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে দুটি মত প্রচলিত আছে। প্রথম মতানুসারে, সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় বাংলার গভর্ণর ছিলেন ইসলাম খাঁ। ইসলামপুর নামকরণ করা হয় সুবাদার ইসলাম খার নামানুসারে। অন্যমতে শতাধিক বছর পূর্বে পুরনো ব্রক্ষ্মপুত্র নদের তীরে ইসলামপুর নামে একটি মৌজা ছিল। এই মৌজায় স্থানীয় জনগণ একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করে। থানা সৃষ্টি হলে থানার নামকরণ হয় এই মৌজার নামানুসারে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাঃ
জনশ্রুতি অনুসারে, প্রায় দুশো বছর পূর্বে দেওয়ান শাহ জালাল ও দেওয়ান শাহজামাল নামে দুই কামেল পীর গারো পাহাড়ে তাঁদের দরগা শরীফে যাওয়ার সময় বর্তমান থানা সদরের এই স্থানে কিছু সময়ের জন্য থেমে বিশ্রাম নেন। এই দুই কামেল পীরের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য এই জায়গার নাম রাখা হয় দেওয়ানগঞ্জ।
সরিষাবাড়ি উপজেলাঃ
তদানিন্তন বৃটিশ শাসনামলে বর্তমান চর সরিষাবাড়ী ছিল আদি সরিষাবাড়ী। খরস্রোতা যমুনার কড়াল গ্রাসে আদি সরিষাবাড়ী বিলুপ্ত। তখন নদীর নাব্যতা ছিল, চলাচল করতো ষ্টীমার, জাহাজ। নদী বিধৌত চার ইউনিয়নের পি
ংনা, পোগলদিঘা, আওনা, কামরাবাদ এর অধিকাংশ ভূমিতেই সরিষা আবাদ হতো। বীর অঞ্চলের চারটি ইউনিয়নেও প্রচুর সরিষা আবাদ হতো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে বানিজ্য করার লক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা সরিষা কিনতে আসত।  সে সময়কাল হতেই এই স্থানটির নাম রাখা হয় সরিষাবাড়ী।
মাদারগঞ্জ উপজেলাঃ
শাহ্ মাদার একজন ধর্ম প্রচারক। তিনি সিরিয়া থেকে ধর্ম প্রচার করার জন্য এদেশে আগমন করেন। তাঁর পুরু নাম চিল সেয়দ বদিউদ্দিন কুতুব-উর মাদার। শাহ। মাদার ফকির বিদ্রোহের নেতা মজনু শাহ্ এর সাথে সরাসরি ফকির আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।১৭৬৩ সালের দিকে শাহ্ মাদার দুর্গম এই চরে আগমন করার পর ফকিরগণ ত৭ার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে এবং তারা মাদারিয়া সম্প্রদায় ভূক্ত হয়ে যান। ১৭৭২ সালে বর্ষায় ফকির-সন্ন্যাসী বগুড়া ও ময়মনসিংহ জেলার বিবিন্ন গ্রামে ব্যাপক লুটতরাজ ও দাঙ্গা সৃষ্টি করে। তারা  কৃষকদের সর্বস্ব লুটে নেয়। এতে দেশে শুরু হয় ভয়াবহ অবস্থা। সন্ন্যাসী বিদ্রোহ কিছুটা দমন হলে ১৮১৫ সালে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট মি. ইয়ার মাদারগঞ্জ এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ও সরকারী ফরমান জারী করার জন্য ১৩ জন চৌকিদার নিয়োগ করেন।১৮৪৫ সালে জামালপুর মহকুমা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ১৮৮২ সালে মাদারগঞ্জ একটি পুলিশ ফাডিঁ স্থাপন করা হয়। ফাঁডি স্থাপনের ২৪ বছর পর ১৯০৬ সালের ১৫ জুন পূর্ববঙ্গ আসাম গেজেটে মাদারগঞ্জ পুলিশ ফাঁডিকে পূর্নাঙ্গ থানায় রুপান্তর করা হয়। মাদারগঞ্জ সেই থেকে একটি থানার নাম। বর্তমানে ইহা একটি উপজেলার নাম।
বকশীগঞ্জ উপজেলাঃ
বকশীগঞ্জ নামকরনটি নিয়ে রয়েছে নানান মতভেদ । কেউ কেউ বলেন অনেক অনেক দিন আগে এখানে নাকি “বকশী”নামে অলেৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন এ মুসলিম ফকির ছিলেন ।  তাকে কেন্দ্র করে একটি খনকা বা আস্তানা গড়ে উঠে ; আর এই আস্তানাকে কেন্দ্র করেই ধীরে ধীরে গড়ে উঠে একটি ছোট হাট । সেই অলেৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তির নাম অনুসারে এর নাম হয় বকশীর হাট । কালের বিবর্তনে অতীতের বকশীর হাট বর্তমানে “বকশীগঞ্জ”নামে পরিচিত ।“১৯৮২ ইং সালের ৩০ শে এপ্রিলের আগ পর্যন্ত বকশীগঞ্জ একটি উইনিয়ন ছিল । ১৯৮২ ইং সালের ৩০ শে এপ্রিল দেোয়ানগঞ্জ থানা থেকে ০৫ টি  এবং শ্রীবরদী থানা থেকে ০২ টি  ইউনিয়ন নিয়ে মোট ০৭ টি ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বয়ে অপরাহ্নে ঘোষনার মাধ্যমে বকশীগঞ্জ “ইউনিয়ন”থেকে বকশীগঞ্জ “থানা”  উন্নীত করা হয় । এর ঠিক ১৭ ( সতের) মাসের মাথায় অর্থাৎ ১৯৮৩ইং সালের ১৪ই সেপ্টম্বর  বকশীগঞ্জ থানা কে  “বকশীগঞ্জ উপজেলায়” উন্নীত করা হয়

জামালপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস জামালপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on August 01, 2018 Rating: 5

ফরিদপুর জেলা ও এর উপজেলার নামকরণের ইতিহাস

July 31, 2018
ব্রিটিশ শাসন আমলে সৃষ্ট একটি অন্যতম প্রাচীন জেলার নাম ফরিদপুর। অনেক আউলিয়া-দরবেশ, রাজনীতিক, পূণ্যাত্মার আবাসভূমি হিসেবে এ অঞ্চল অত্যন্ত সুপরিচিত।  এ জেলার পূর্বনাম ছিল ‘‘ফতেহাবাদ’’।  প্রখ্যাত সাধক এবং দরবেশখাজা মাইনউদ্দিন চিশতী (রহঃ) এর শিষ্য শাহ ফরিদ (রহঃ) এর নামানুসারে এ জেলার নামকরণ করা হয় ফরিদপুর।


ফরিদপুর জেলার উপজেলা সমুহঃ ফরিদপুর সদর, আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী, সদরপুর, নগরকান্দা, ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন, মধুখালী, সালথা

আলফাডাঙ্গা উপজেলা
কবে কখন আলফাডাঙ্গার নামকরন হয়েছিল তার সঠিক তথ্য জানা যায় না।  তবে কেউ কেউ বলেন মধুমতি নদীর কূলে ‘‘আলফা’’ নামে এক ধরনের লতানো গাছে সুন্দর ফুল ডাংগায় ফুটতো; সেই থেকে আলফা ফুলের নামানুসারে আলফাডাঙ্গার নামকরন হয়।


বোয়ালমারী উপজেলাঃ

বর্তমান বোয়ালমারী উপজেলার বরশিয়া নদীর তীরে। বলা হয়ে থাকে, এক সময় এ নদীতে প্রচুর পরিমাণে বোয়াল মাছ পাওয়া যেতো। এই বোয়াল থেকে বোয়ালমারী নামকরণ করা হয়েছে। 

সদরপুর উপজেলা
সদরপুর নাম করনের তেমন কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র পাওয়া যায়নি। তবে লোক মুখে জানা যায় যে, স্থানীয় বাইশ রশি জমিদারদের যাতায়াতের জন্য বর্তমান থানার উত্তর পার্শ্বে ভূবনেশ্বর নদীতে তৎকালে বড় বড় পানশী নৌকা  রাখিত এবং যখনই এই স্থানে আসার প্রয়োজন হইত তখনই ‘‘সদর’’ কথাটি ব্যবহার করিত। এ থেকেই স্থানটির নাম করন সদরপুর হয়।

নগরকান্দা উপজেলা ঃ
নগর সভ্যতার উষা লগ্নে নগরকান্দা এলাকাটি ছিল একটি জলা ভূমি অঞ্চল। কালের পথ পরিক্রমায় এক সময় এলাকা বসবাস যোগ্য হয়ে উঠে।নগরের প্রান্ত বা কান্দা হিসেবে ’নগরকান্দা’ নামের উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়।
ভাঙ্গা উপজেলা
ভাংগা কুমার নদীর পাড়ে অবস্থিত। কথিত আছে কুমার নদীর পাড়ে কুমারগঞ্জ নামে একটি বিরাট হাট বসত। কোন এক সময় হাটকে কেন্দ্র করে কুমার নদীর এপার ওপারের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগে এবং দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে ওপারের লোকজন কুমারগঞ্জের হাট ভেঙ্গে ওপারের হাট চালু করে। চালুকৃত হাটকেই ভাঙ্গার হাট নামে নামকরণ করা হয়। এ থেকেই ভাংগা উপজেলার উৎপত্তি।
চরভদ্রাসন উপজেলা
ব্রিটিশ শাসন আমলের সমাপ্তির দিকে তখনও জমিদারী প্রজাতন্ত্র আইন রহিত হয়নি। জনশ্রুতির মতে এ এলাকায় ব্রিটিশদের নিয়োজিত জমিদারের পেয়াদা ছিল মঙ্কিম। স্বাধীনচেতা মঙ্কিম ছিল তিতুমীর এর ভাব স্বাগরেদ। তারই নির্দেশে জমিদারদের খাজনা না দেওয়ার জন্য উদ্ধুদ্ব করেন। ফলে সংশ্লিষ্ট জমিদার মকিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। কয়েকদিনের মধ্যে শুরু হয় বন্দুক
যুদ্ধ। মকিম নিহত হয়। তার অন্যান্য অনুসারীদের দেশত্যাগ করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে তার অনুগতদের চর পত্তন দেয়।  কথিত মতে তখন এলাকার নাম করন করা হয় চরভদ্রাসন।
ভাঙ্গা উপজেলাঃ
জানা যায়, সর্বপ্রথম কুমারগঞ্জে থানা সদর স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে থানাটি একাধিক বার একস্থান থেকে

চরভদ্রাসন উপজেলাঃ


মধুখালী উপজেলার নামকরন
এক সময় এখানে প্রচুর মধু পাওয়া যেত এজন্য এ উপজেলার নাম মধুখালী হয়েছে বলে জানা যায় ।

সালথা উপজেলার নামকরন
সালথা উপজেলা নামকরণের সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়না। 



ফরিদপুর জেলা ও এর উপজেলার নামকরণের ইতিহাস ফরিদপুর জেলা ও এর উপজেলার নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on July 31, 2018 Rating: 5

চাঁদপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

July 31, 2018

 বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদরায়ের দখলে ছিল। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন।  ঐতিহাসিক জে. এম. সেনগুপ্তের মতে, চাঁদরায়ের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাঁদপুর। অন্যমতে, চাঁদপুর শহরের (কোড়ালিয়া) পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর।  কারো মতে, শাহ আহমেদ চাঁদ নামে একজন প্রশাসক দিল্লী থেকে পঞ্চদশ শতকে এখানে এসে একটি নদীবন্দর স্থাপন করেছিলেন।  তার নামানুসারে নাম হয়েছে চাঁদপুর।  



চাঁদপুর জেলার উপজেলা সমুহঃ
 হাইমচর, কচুয়া, শাহরাস্তি, চাঁদপুর সদর, মতলব, হাজীগঞ্জ, মতলব, ফরিদগঞ্জ।  


 

হাইমচর উপজেলাঃ

লোকমুখে জানা যায়, হাইমচর উপজেলার সাথে শরিয়তপুর জেলার গোসাইরহাট ও বরিশালের মুলাদী থানার  সীমানা নির্ধারন নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে তা সমাধানের জন্য হেম বাবু নামে জনৈক  দক্ষ সার্ভেয়ার নিয়োগ  করা হয়।  দক্ষতার সাথে তিনিই এ সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করতে সক্ষম হলে তাঁর নামানুসারে এখানকার নামকরণ হয় হাইমচর।  অপর একটি সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিক্রমপুর জনৈক হেম বাবুর অত্র এলাকায়ি একটি ছোট জমিদারী পরগোনা ছিল। তার নামানুসারে এ জনপদের নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালে চাঁদপুরের দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়ন একত্রে থানা করার সময় অত্র থানার  নামকরণ হাইমচর নামে অভিহিত হয়।


কচুয়া উপজেলাঃ

"কচুয়া ভরপুর জলে ও স্থলে, সোনার মানুষ আর সোনা ফলে" কচুয়া থানার কচুয়া নামকরণের সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও জনশ্রুতি হিসেবে তথ্য পাওয়া যায়।  প্রথমটি হচ্ছে সেনিটিক ভাষায় উপশহরকে কাচওয়া বলে এই কাচওয়া  শব্দ কালক্রমে লোকমুখে লোকান্তরিত হয়ে কচুয়া নামকরণ হয়।  দ্বিতীয়টি  হচ্ছে ১৯০৫  সালে হাজীগঞ্জ থানাকে দুইটি ভাগে বিভক্ত করে সীমানা অায়তন নির্ণ য়ের জন্য জরিপ কাজ চালানো হয়।  একজন পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে এই জরিপ কাজ পরিচালিত হয়। জরিপ কাজ শুরু হয় দাউদকান্দি থানার দক্ষিণ সীমানা অর্থাৎ কচুয়া থানার উত্তর প্রান্ত থেকে। জরিপ কাজে এক পর্যায়ে কাজে নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তাও অন্যান্য লোকজন বর্তমানে কচুয়া বাজার সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বে গ্রামের দক্ষিণের অংশে এসে কয়েকটি তালগাছের সন্ধান পেলে তালগাছ এলাকার উচুঁ স্থানে তাবু খাটিয়ে কয়েকদিন অবস্থান করেন (এ স্থান এলাকা বর্তমানে ধলিকচুয়া নামে পরিচিত) এ গ্রামের জৈনক মোঃ আলী আকমত পুলিশ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনাদের জরিপ কাজ কতটুকু হয়েছে। উত্তরে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন "কুচহুয়া"।  উর্দু শব্দ কুচ মানে কিছু এবং হুয়া মানে হয়েছে।  অর্থাৎ কিছু অংশ হয়েছে।  এ "কুচহুয়া" শব্দ হতে কচুয়া নাম করণ হয়। 

 

শাহরাস্তি উপজেলাঃবাংলাদেশে আগত ৩৬০ জন আওলিয়ার মধ্যে উক্ত থানায় হযরত শাহরাস্তি (রাঃ) এর মাজার অবস্থিত।  অত্র থানার জনগণের সমর্থনে হযরত শাহরাস্তি (রঃ) হুজুরের নামানুসারে শাহরাস্তি উপজেলার নামকরণ করা হয়।মতলব শেরশাহের শাসন কালে (১৫৩৯-১৫৪৪ খ্রীঃ) সর্বপ্রথম বাংলাদেশ জরিপ হয়শেরশাহ বাংলাকে সর্বমোট এক চলিস্নশটি পরগনায় বিভক্ত করেন মতলব  চাঁদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠন হয় মীর মহববত উল্লাহ (রঃ) এর নাম অনুসারে মহববতপুর পরগনা,  বরদিয়া, বোয়ালিয়া, ও সিংহেরগাঁও পরগনার কিছু আংশ নিয়ে মহববতপুর পরগনা গঠিত হয়েছিল ১৭২৮ খ্রীস্টাব্দে প্রস্ত্ততকৃত রাজস্ব তালিকায় এর রাজস্ব নির্ধারিত হয় ৬৪৫৬ টাকা।  ঢাকা নিবাসী সেম সাহেব নামক জনৈক ব্যক্তি  সেই পরগনার জমিদারী লাভ করেন জমিদারীর কাজ কর্ম পরিচালনার জন্য  তাহার পর থেকে মতলেব খাঁ নামক জ্ঞানী ও বিজ্ঞ ব্যক্তিকে অত্র এলাকায় নায়েব হিসেবে প্রেরণ করেন।  মতলেবখাঁ দীঘলদী নামক গ্রামে জমিদারী কার্যালয় স্থাপন  করেন সেই স্থানটিকে জমিদারের বের হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় বর্তমান মতলবের নাম ছিল জগনাতগঞ্জ।  ১৬২৬ খ্রীস্টাব্দে ১২৫জন বৈরাগী এই বাজারটির প্রতিষ্ঠা করেন সেই সময় মতলব বাজারের পূর্ব অংশে অসংখ্য বট বৃক্ষ ছিল।  এই স্থানে বৈরাগীদের আড্ডায় অনেক লোক আসা যাওয়া করত।  চারি দিকে  দোকানপাট গড়ে  উঠে একটি   বাজারে রূপান্তরিত হয়।  পরবর্তী পর্যায়ে বাজারটি বৈরাগীহাট নামে পরিচিতি লাভ করে।  মতলবেখাঁর আগমনে বাজারটি  আগমনে  বাজারটি আরও পশ্চিম দক্ষিণে প্রসারিত হয়। লোক মুখে মতলবে খাঁর হাট নামে পরিচিতি লাভ করে।


 
মতলব  উপজেলাঃ

 
জনশ্রুতি আছে, মতলব নামকরণ করা হয়েছে এই অঞ্চলের বিখ্যাত প্রতাপশালী জমিদার মতলব হাওলাদারের নামানুসারে।  

 

হাজীগঞ্জ উপজেলা ঃ

 

হাজীগঞ্জ উপজেলার পটভূমি ।  হাজীগঞ্জ মেঘনার পূর্বপ্রান্তে অতি পুরাতন ব্যবসা-বাণিজ্যর কেন্দ্ররূপে খ্যাত ।  এগার’শ বাংলাসনের কাছাকাছি হাজী মকিম উদ্দিন (রঃ) নামে একজন বুজর্গ অলীয়ে কামেল  ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে পবিত্র আরব  ভূমি হতে  স্ব-পরিবারে এ অঞ্চলে আগমন করেন।  চাঁদপুর-কুমিল্লা রাস্তার  উত্তর পাশে  বর্তমান মসজিদের মাঝখানে একটি পুকুর ছিলো । সেই পুকুরের উত্তর পশ্চিম কোনে তিনি আত্তা স্থাপন করেন।  কয়েক বছরের মধ্যে এ অলীয়ে কামেলের আগমন বার্তা ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করতে থাকে।  পীরে কামেল হযরত মকিম উদ্দিন (রঃ) এর বংশের হাজী মুনির উদ্দিন (মনাই হাজী) (রঃ) পৈত্রিক খানকা শরীফে (হুজুরা  নামে খ্যাত) আশেপাশে  হতে আগত ভক্তগণকে নিয়ে ধর্ম কর্ম সম্পাদনের জন্যে মুরিদগণকে ছবক প্রদান করতেন। তিনি খুবই সাধাসিধে জীবন যাপন করতেন এবং সুন্নাতে রাসূল (সঃ) হিসেবে সম্পদায়ের জন্যে ব্যবসা কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে তৎসময়কার নাখালের উত্তর পাড়ে একটি দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। নিত্য প্রয়োজনীয় এই দোকানের খ্যাতি অল্প দিনের মধ্যেই লোকমুখে রূপকথার ন্যায় ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে হাজী সাহেবের দোকানের নাম করন থেকে হাজীগঞ্জ বাজার নাম করন করা হয় ।

 

ফরিদগঞ্জ উপজেলাঃ

 

এ উপজেলার নাম কেন ফরিদগঞ্জ হয়েছিল তার ঐতিহাসিক তাৎপর্য সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত আছে।  এর মধ্যে সম্ভবত নিম্নের তিনটি ধারণার উপর ভিত্তি করে আজকের ফরিদগঞ্জ উপজেলার নামকরন করা হয়েছিল ‘‘ফরিদগঞ্জ’’। এক : বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অনেক পূর্বে শেখ ফরিদ নামে একজন বিখ্যাত মুসলিম সাধক এই এলাকায় ইসলামধর্ম প্রচার করে বহু মানুষকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেছিলেন।  কারো কারো মতে, উক্ত সাধকের নামানুসারে এই এলাকার নাম রাখা হয়েছিল ফরিদগঞ্জ  ।

দুই :  পূর্বে এ এলাকায় তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ব্যবসা কেন্দ্র ছিল না বলে জানা যায়। তবে এই এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদী পথে অনেক ব্যবসায়ীর যাতায়াত ছিল। তারা অনেক সময় রাত্রি যাপনের স্থান হিসাবে এই এলাকাটিকে সর্বাপেক্ষা নির্ভরযোগ্য স্থান মনে করে এখানে রাত্রি যাপন করত।  এলাকায় তৎকালীন জমিদার স্থানীয় জনগণের সুবিধার্থে এই এলাকায় একটি ব্যবসা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় জনগণকে উৎসাহিত করেছিলেন। তার উৎসাহে সবচেয়ে বেশী উৎসাহিত হয়েছিলেন ফরিদ আলী নামে একজন ব্যবসায়ী। জনসাধারণকে আরো উৎসাহিত করার মানষে জমিদার উক্ত ফরিদ আলীর নামানুসারে বাজারটির নামকরন করেছিলেন ফরিদগঞ্জ।

তিন : এই উপজেলার অন্তর্গত তৎকালীন রূপসার জমিদারের প্রতাপ ছিল বেশী।  তার পরিবারের একজন সদস্য  ছিলেন ফরিদা বানু।  জমিদার স্নেহবশে ফরিদা বানুর নামানুসারে এলাকাটির নামকরন করেন।

 


চাঁদপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস চাঁদপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on July 31, 2018 Rating: 5

যশোর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

July 31, 2018

যশোর নামের উৎপত্তি অনেক কথা প্রচলিত আছে; এখন যে শহরকে যশোর বলে তা থেকে প্রাচীন যশোর নগরী বহুদূরে অবস্থিত। প্রাচীন সেই প্রকৃত যশোহর এখন খুলনার মধ্যে। সে যশোর এক প্রাচীন স্থান এবং সেস্থান যে রাজ্যের মধ্যে সংস্থিত, তারও নাম যশোর। এর নাম যশোর কেন হলো, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। আরবী জসর বা যশোর শব্দের অর্থ সেতু বুঝায়। যশোর জনবহুল দেশ বলে এই অর্থে তার নামোৎপত্তি হয়েছে, এটাই সুপ্রসিদ্ধ কানিংহাম সাহেবের ধারনা।  (The Name of Jasar, the bridge, shows the nature of the country which is completely intersected by deep water course) কিন্তু মুসলমান অধিকারের পূর্ব থেকে যশোর নামের উল্লেখ দেখা যায়।  যশোর একটি পীঠ স্থান; পীঠ স্থানের তালিকায় যশোরের নাম আছে।
‘যশোরে পাণিপদ্মঞ্চ দেবতা যশোরেশ্বরী।
চণ্ডশ্চ ভৈরবো যত্র তত্র সিদ্ধিমবাপ্লুয়াৎ।। -তন্ত্রচূড়ামণি
 অন্যান্য প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে যেখানে যশোর রাজ্যের প্রসঙ্গ আছে, সেখানে যশোর নামাই দেখা যায়, যশোহর নাম নেই। প্রতাপদিত্য এই যশোর রাজ্যের রাজা হয়েছিলেন। বর্তমান খুলনা জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত কালীগঞ্জ থেকে ১২ মাইল দক্ষিণে সুন্দরবন অঞ্চলে তার রাজধানী ছিল।  সে রাজধানীর নামও যশোর।
‘যশোর নগর ধাম, প্রতাপ আদিত্য নাম,
মহারাজা বঙ্গজ কায়স্থ। -ভারতচন্দ্র কৃত অন্নদামঙ্গল
এই রাজধানীর অন্তর্গত ইশ্বরীপুর নামক স্থানে এখন যশোরেশ্বরী দেবীর পীঠ মন্দির ও মূতি আছে। প্রতাপাদিত্যের পিতা বিক্রমাদিত্যের রাজত্বকালে প্রথম ‘যশোহর’ নাম হয়। যশোরে বনস্থালী আবাদ করে সেখানে নগরী স্থাপনের সময় প্রতাপাদিত্যের খুল্লতাত সুকবি বসন্তরায় যশোরকে যশোহর করেছিলেন, এটাই বিশ্বাসযোগ্য এবং এমন প্রবাদও প্রচলিত আছে।বঙ্গের শেষ পাঠান নৃপতি দায়ুদশাহ মোঘলদের কাছে পরাজিত হয়ে পালানোর সময় রজাধানী গৌড় ও তাণ্ডার অধিকাংশ রাজকীয় ধনরত্ন বিক্রমাদিত্যের হাতে সমর্পণ করেন। কেউ কেউ এমন অনুমান করেন যে, নতুনপ্রতিষ্ঠিত যশোরনগরী এভাবে গৌড়ের যশ: হরণ করে বলেই এর নাম হয়েছিল- যশোহর।
আবার কেউ বলেন যে, গৌড়ের সাথে তুলনা না করেই কোন ব্যক্তি এ রাজ্য ‘অত্যাধিক যশস্বী’-এই অর্থে ‘যশোহর’ নাম দিয়েছিলেন।
‘It was intended to express the idea ‘Supermely glorious.” –Westland’s Report on the district of Jessore, 1871.
কিন্তু যশোর নাম নতুন দেওয়া হয়নি।  পূর্বে এর একটা নাম ছিল এবং সে নাম যশোর।
রামরাম বসুর মতে, দক্ষিণ দেশে যশহর নামে এক স্থান ছিল। নাম যশোর বা যশহর যাই থাকুক তাতে বিশেষ অর্থ হতো না। এজন্য বিক্রমাদিত্যের রাজত্বকালে তাকে বিশুদ্ধ ও অর্থসঙ্গত করার জন্য ‘যশোহর’ নামকরণ করা হয়ে থাকবে। তখন থেকে পণ্ডিত ও কুলাচার্য্যগনের উক্তিতে যশোহর নাম দেখা যায়।
পণ্ডিত-রচিত কবিতায়-যশোহরপুর
ী কাশী দীর্ঘিকা মণিকর্ণিকা।
ঘটক কারিকায়-‘সেনাপতিরূপা বা যশোহরসুরক্ষকা’।
অনত্র- ‘রাজবিপ্লবেন গৌড়ৎ যশোহরং সমাগত:।
তবুও সে পর্যন্ত যশোর ও যশোহর শব্দ এক অর্থে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
প্রতাপের পরাজয়ের পর বিজয়ী মানসিংহ বসন্তরায়ের পুত্র কচুরায় বা রাঘবকে ‘যশোরজিৎ’ উপাধি দেন। যশোরের রাজ্য শাসনের জন্য যে একজন ফৌজদার নিযুক্ত হন তাকে যশোরের ফৌজদার বলা হতো। ১৭৮১ খৃস্টাব্দে শান্তিরক্ষার জন্য ফৌজদারদের মত একজন শাসক বা ম্যজিস্ট্রেট নিযুক্ত করা হয়। তখন যে অফিস আদালত হলো, তাকে মুড়লীর কাছারীও বলত, যশোরের কাছারীও বলত। ১৭৮৯ খৃস্টাব্দে এসব কাছারী পাশ্ববর্তী কসবা বা সাহেবগঞ্জে স্থানান্তরিত হলে ঐ স্থানের নাম হলো যশোর বা Jessore. সাধারণভাবে লোকে একে যশোর বলত এবং বাংলা ভাষার বিশুদ্ধ করার জন্য যশোহর লেখা হতো।
যশোর জেলার উপজেলা সমুহঃ মণিরামপুর, অভয়নগর, বাঘারপাড়া, চৌগাছা, ঝিকরগাছা, কেশবপুর, যশোর সদর, শার্শা।
মনিরামপুর উপজেলাঃ
ধারণা করা হয়, মণি এবং রাম নামের দুই ভাইয়ের নামে নামকরণ করা হয়েছে মণিরামপুর। যশোরের কবি-সাহিত্যিকদের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, চাঁচড়ার রাজ সীতারাম মণি ও রাম নামের দু’জন দূতকে নিয়ে তৎকালীন যশোরের 20 কিমি দক্ষিণের এই জনপদ পরিদর্শন করেন। এই মণি ও রামের নামানুসারে এই জনপদের নাম হয়েছে মণিরামপুর। আবার কারো কারো মতে, স্থানীয় প্রভাবশালী জমিদার মণিরাম বাবুর নামানুসারে এই এলাকার নাম হয় মণিরামপুর।
অভয়নগর উপজেলা
১৮৭৫ খিস্টাব্দের ১৬ ই মার্চ অভয়নগর মৌজায় তৎকালীন রাজা প্রতাপাদিত্যের কন্যা রানী অভয়ার নামানুসারে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের অভয়নগর মৌজাতে অভয়নগর থানা সদর প্রতিষ্ঠিত হয়্ এর থেকে অভয়নগর উপজেলার নামকরন হয় অভয়নগর।
বাঘারপাড়ার ইতিহাস
কেবল বাঘারপাড়া নয়, এই শতকের তৃতীয় দশকেও যশোর খড়কীসহ অনেক অঞ্চল জংগলে পরিপূর্ণ ছিল। চিত্রার পাড়ের বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যেতো। এ থেকেউপজেলার নাম  বাঘেরপাড়া।
চৌগাছার উপজেলা
চৌশব্দের অর্থ চার আর গাছা শব্দের অর্থ গাছ। অর্থাৎ চারগাছের সমাহার চৌগাছা আবার কেউ কেউ মনে করেন  চার  রাস্তার সমাহার  চৌগাছা। করগাছার প্রাচীন জনপদ গদখালী।জেনকিনস  সাহেব এখানে নীল কুঠি স্থাপন করার  পর  আর এক ইংরেজ ম্যাকানজি সাহেব নীল কুঠির সাথে অন্যান্য কলকারখানা স্থাপন করে গদখালীর উন্নয়ন সাধন করেন। এই জন্যে ম্যাকানজি সাহেবকে ঝিকরগাছার রুপকার বলা হয়।ঝিকরগাছার অপর নাম ম্যাকানজি গঞ্জ। ১৮৬৩ 
সালে  কপোতাক্ষ  নদের  পশ্চিম  পাড়  যশোর  জেলার  অন্তর্ভূক্ত হয় এবং গদখালীকে যশোরের  একটি থানা করার  প্রয়োজন হয় গদখালীতে পানীয় জলের অভাবের কারণে যশোরের দিকে  ২ মাইল পিছিয়ে বেনেয়ালীতে  গদখালীর  নামেই গদখালী থানা স্থাপন করা হয়।  বেনেয়ালীতে ছিল গভীর বন চোর ডাকাতদের অভয়াশ্রম।ম্যাজিষ্ট্রেট  বিনফোর্ট  এর নেতৃত্বে এ অভয়াশ্রম ধ্বংশ করা হয়।পরবর্তীতে সুবিধামত কোন এক সময়ে যশোর  কোলকাতা সড়কের  কপোতাক্ষ  নদের উভয়  পাশে বাজার  গড়ে উঠায় থানা  বেনেয়ালী থেকে  বর্তমান স্থানে  চলে আসে  অর্থাৎ  ঝিকরগাছায়।
ঝিকরগাছা উপজেলাঃ
সতের শতকে ফরাসি বেনিয়া জুনেট সাহেব কপোতাক্ষ নদের তীরে ব্যবসাকেন্দ্র গড়ে তোলেন। তারই নামানুসারে এই অঞ্চলটি জানটি নগর নামে পরিচিত ছির। ব্রিটিশ আমলে জেংকিন্স সাহেবের নাম ছিল ঝিনকার (Mr. Jhinker) পরে সেই ঝিনকার সাহেবের নামানুসারে জুনেট নগরের নাম পরিবর্তিত হয়ে ঝিনকারগাছা হয়। সেই ঝিনকারগাছা কালের বিবর্তনে ঝিকরগাছা নামে পরিচিতি লাভ করে। 
কেশবপুর উপজেলাঃ
বলা হয়ে থাকে, কেশবচন্দ্র উপজেলার বর্তমান এলাকায় বাস করতেন। স্থানীয় লোকজনের মতে কেশবচন্দ্রের নামানুসারে এ এলাকার নাম হয়, কেশবপুর।
শার্শা উপজেলাঃ
শার্শা গ্রামের নামকরণ সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য নেই।

যশোর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস যশোর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on July 31, 2018 Rating: 5

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

July 31, 2018

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নামকরণ নিয়ে একাধিক মত প্রচলিত আছে। এস এম শাহনূর সম্পাদিত নামকরণের ইতিকথা থেকে জানা যায় যে সেন বংশের রাজত্ব্যকালে এই অঞ্চলে অভিজাত ব্রাহ্মণকুলের বড়ই অভাব ছিল। যার ফলে এ অঞ্চলে পূজা অর্চনার জন্য বিঘ্নতর সৃষ্টি হতো। এ সমস্যা নিরসনের জন্য সেন বংশের শেষ রাজা রাজা লক্ষণ সেন আদিসুর কন্যকুঞ্জ থেকে কয়েকটি ব্রাহ্মণ পরিবারকে এ অঞ্চলে নিয়ে আসেন।  তাদের মধ্যে কিছু ব্রাহ্মণ পরিবার শহরের মৌলভী পাড়ায় বাড়ী তৈরী করে। সেই ব্রাহ্মণদের বাড়ির অবস্থানের কারণে এ জেলার নামকরণ ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয় বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। অন্য একটি মতানুসারে দিল্লী থেকে আগত ইসলাম ধর্ম প্রচারক শাহ সুফী হযরত কাজী মাহমুদ শাহ এ শহর থেকে উল্লেখিত ব্রাহ্মণ পরিবার সমূহকে বেরিয়ে যাবার নির্দেশ প্রদান করেন, যা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হয়।  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ 'বাউনবাইরা' । ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিকৃত নাম 'বি-বাড়িয়া' বহুল প্রচলিত  


ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপজেলা সমুহঃ  ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কসবা, নাসিরনগর, সরাইল উপজেলা, আশুগঞ্জ, আখাউড়া, নবীনগর, বাঞ্ছারামপুর, বিজয়নগর।

কসবা উপজেলাঃ
কসবা ফরাসী শব্দ। কসবা শব্দটির অর্থ উপশহর বা জনপদ। ভারতবর্ষে মুসলমান শাসনামলে ১৩৩৮ খিস্ট্রাব্দে আলাউদ্দিন হোসেন শাহ রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশে কৈলাঘর নামে একটি দূর্গ নির্মাণ করেছিলেন। ঐ দূর্গের আশে পাশে প্রথম দিকে জনবসতি এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে ছোট শহর কসবা গড়ে ওঠে।  সেজন্য কৈলাগড় থেকে কসবার উৎপত্তি। রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশে কৈলাগড় দূর্গের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়।


নাসিরনগর উপজেলাঃ

কিংবদন্তি হযরত শাহজালাল (রহঃ) এবং  তার একজন সহযোদ্ধা নাসিরউদ্দীন সিলেট যাত্রাপথে এই স্থানে কিছুদিন অবস্থান করেন। এই যোদ্ধা নাসিরউদ্দীনের নামানুসারে এই অঞ্চলের নাম হয় নাসিরনগর।

সরাইল উপজেলা

সরাইখানা শব্দের অর্থ ক্ষণস্থায়ী বাসস্থান।  ফার্সী ঈল শব্দের অর্থ বিদ্রোহী বন্ধু।  সরাই+ঈল= সরাইল  অর্থাৎ  বিদ্রোহী  বন্ধুর বাসস্থান ফখরুদ্দিন বাহরাম খানের  শিলহদর(বর্মরক্ষক) অর্থাৎ দেহরক্ষী হিসেবে বিদ্রোহী হয়ে তিনি যে স্থানে  সামরিক প্রস্ত্ততির জন্য ক্ষণস্থায়ী রাজধানী করেছিলেন, সেই স্থানটি দিল্লীর সুলতান  ও তাঁর সভাসদগণ, স্থপতিগণ  কর্তৃক সরাই+ঈল= সরাইল নামে আখ্যায়িত হয়েছিল।


আশুগঞ্জ উপজেলা

আজকের বিখ্যাত আশুগঞ্জের প্রতিষ্ঠা হয় প্রায় একশত বছর পূর্বে সবুজ শ্যামল পাখি ডাকা ছায়া সুনিবিড় মেঘনা পাড়ে  আশুগঞ্জ মূলত চরচারতলা, আড়াইসিধা, যাত্রাপুর, বড়তল্লা, সোনারামপুর, তালশহর, সোহাগপুর, বাহাদুরপুর গ্রামকে ঘিরেই ১৮৯৮ খ্রিঃ গোড়াপত্তন হয় আশুগঞ্জ প্রতিষ্ঠার পূর্বে এলাকার জনগন ভৈরব বাজারে গিয়েই তাদের দৈনন্দিন কেনাবেচা করত।  ভৈরবের সপ্তাহিক হাট ছিল প্রতি বুধবার ভৈরব বাজারের তদানীন্তন মালিক ভৈরব বাবু  কর্তৃক আরোপিত  করভারে মেঘনার পূর্ব পাড়ের ক্রেতা ক্রেতারা অতিষ্ট  হয়ে মেঘনার পূর্ব পাড়ে  সৈকতের বালিকণা তথা  সোনারামপুর  মাঠের  উপর  হাট বসিয়ে নেয়।  প্রতি বুধবারে নদী সেকতের চিকচিক বালিকণার উপর হাট বসেই চললো।  তখন  অত্র এলাকা সরাইল পরগনার জমিদারের অধীন ছিল। তখনকার সরাইল এর জমিদার ছিলেন মহারাজ আশুতোষনাথ। অত্র এলাকার জনগণ রাজা আশোতোষ নাথ এর আর্শীবাদ পাওয়ার জন্য রাজা আশোতোষ নাথ এর নামের সাথে  গঞ্জ  যোগ করে দিয়ে এর নাম করণ করা হয় আশুগঞ্জ।


আখাউড়া উপজেলাঃ

এ এলাকাটি এক সময় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। সে সময়ে ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজা রাধাকৃষ্ণ মাণিক্য এই এলাকায় (রাধানগর গ্রামে) একটি রাধাকৃষ্ণের মন্দির স্থাপন করেন, যা স্থানীয় লোকজনের নিকট আখড়া নামে পরিচিত ছিল। কালক্রমে ভাষার বিকৃতি ঘটে আখড়া আখাউড়ায় রুপান্তর হয়।

নবীনগর উপজেলাঃ

কথিত আছে, অতীতে এই অঞ্চল নদীগর্ভে বিলীন ছিল। পরবর্তীতে পলি জমে এখানে চর পড়ে। কিছু সংখ্যক লোক এখানে এসে বসতি স্থাপনের জন্য নতুন নতুন ঘর (অর্থাৎ নবীন ঘর) নির্মাণ করে। এই নবীন ঘরই কালক্রমে পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানের নবীনগর নামের উৎপত্তি। আবার বলা হয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান এই চরে প্রথমে বসতি স্থাপন করলে তারা নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর পবিত্র নামানুসারে এই জনপদের নাম রাখেন নবীনগর।

নবী নগর উপজেলাঃ 
নবীনগর নামকরণ নিয়ে একাধিক মত  রয়েছে। কারো মতে “নবীন
গড়” থেকেই নবীনগর নামের উৎপত্তি।  আবার অনেকের ধারনা ইসলাম ধর্মের নবীনর নামের “নবী” ও “নগর” দুটি শব্দের সম্নবয়ে নবীনগর নামকরণ হয়েছে।


বাঞ্ছারামপুর উপজেলাঃ

জনশ্রুতি আছে, ঢাকার তৎকালীন জমিদার রূপলাল বাবুর একজন বিশ্বস্ত রায়ত বাঞ্ছারাম দাস বর্তমান উপজেলা সদরে বাস করতেন। তার আচার-ব্যবহার এবং কাজকর্মের বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তার নামে এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয় বাঞ্ছারামপুর।

বিজয়নগর উপজেলাঃ
বিজয়নগর উপজেলা নামকরণ সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on July 31, 2018 Rating: 5

বরিশাল জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

July 31, 2018

বরিশাল নামকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। এক কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে, পূর্বে এখানে খুব বড় বড় শাল গাছ জন্মাতো, আর এই বড় শাল গাছের কারণে (বড়+শাল) বরিশাল নামের উৎপত্তি। কেউ কেউ দাবি করেন, পর্তুগীজ বেরি ও শেলির প্রেমকাহিনীর জন্য বরিশাল নামকরণ করা হয়েছে।  অন্য এক কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে, গিরদে বন্দরে (গ্রেট বন্দর) ঢাকা নবাবদের বড় বড় লবণের গোলা ও চৌকি ছিল। ইংরেজ ও পর্তুগীজ বণিকরা বড় বড় লবণের চৌকিকে ‘বরিসল্ট’ বলতো। অথাৎ বরি (বড়) + সল্ট (লবণ)= বরিসল্ট।  আবার অনেকের ধারণা এখানকার লবণের দানাগুলো বড় বড় ছিল বলে ‘বরিসল্ট’ বলা হতো।  পরবর্তিতে বরিসল্ট শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে বরিশাল নামে পরিচিতি লাভ করে।
বরিশাল জেলার উপজেলা সমুহঃ  বরিশাল সদর, বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর , বানারীপাড়া, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী , হিজলা।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা
স্বাধীন বাংলার নবাব আলীবর্দী খানের আমলে বুজুর্গ উমেদপুরের জমিদার ঢাকার আগা বাকের খান এ অঞ্চলে ১৭৪১ খ্রিঃ নিজ নামে গঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয় বাকেরগঞ্জ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী আমল১৭৯৭ খ্রিঃ বাকেরগঞ্জ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮০১ সালে জেলা সদর বাকেরগঞ্জ থেকে বরিশালে স্নানান্তর করা হয় বাকেরগঞ্জ জেলা নামটি ১৭৯৭  থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ছিল।  ১৯৯৩ সালে বরিশাল বিভাগ সৃষ্টির ফলে বাকেরগঞ্জ   নামটি  জেলা থেকে বাদ দেয়া হয়।   জেলা সদর বরিশালের নামে বিভাগের নামকরণ  করা হয়। আগা বাকের খান এর স্মৃতি বিজড়িত বাকেরগঞ্জ নামটি বর্তমানে বাকেরগঞ্জ  উপজেলাতেই  সীমাবদ্ধ রয়েছে।
বাবুগঞ্জ উপজেলা
বাবুগঞ্জ নামকরণ সম্পর্কে র্নিভরযোগ্য ইতিহাস পাওয়া না গেলেও ইতিহাস বর্ণনায় জানা যায়, আজ থেকে ৪০০ বছর আগে এ অঞ্চলে বসবাসরত বেশ ক’জন হিন্দু জমিদার তাদের প্রয়োজনে বাবুগঞ্জ উপজেলা সদরের বর্তমান বাজারটি মেলায়।ঐ সময়ে এ অঞ্চলের লোকজন জমিদারদের বাবু বলে সম্বোধন করতো।আর বাজারটিকে তারা অভিহিত করতো গঞ্জ বলে।ফলে জমিদার বাবুদের মেলানো গঞ্জ থেকে এ এলাকার নাম হয় বাবুগঞ্জ।অন্য এক তথ্যানুসারে বলা হয় যে, যশোর পরগনার জমিদার ‘ বাবু বিরাজ রায় চৌধুরী’ এই অঞ্চল প্রাপ্ত হয়ে এখানে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র (গঞ্জ) প্রতিষ্ঠা করেন। বাবু বিরাজ রায় চৌধুরীর নামানুসারে এলাকার নাম হয় বাবুগঞ্জ।
উজিরপুর উপজেলাঃ
কিংবদন্তী থেকে জানা যায়, পতুর্গীজ আমলে ‍উজির-আল-মামুন নামে এক জলদস্যু শেখের বাগ এলাকায় বাস করতো। সেখান থেকেই সে সন্ধ্যা নদীতে দস্যুতা করে বেড়াতো। তার নাম অনুসারে গ্রামের নাম হয় উজিরপুর। আবার উজিরপুর নামকরণেল ক্ষেত্রে সাধারণ ধারণা, ‘ফকির মোহাম্মদ’ নামে মুর্শিদাবাদ নবাবের এক উজির এই অঞ্চলে দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করতেন। এই উজিরের নাম থেকে এলাকার নাম হয় উজিরপুর।

গৌরনদী উপজেলাঃ
‘‘গৌরনদী’’ র নামকরন নিয়ে সুনিদৃষ্ট কোন লিখিত ইতিহাস নেই। ‘‘গৌরনদী’ র নামকরন সম্পর্কে প্রবীনদের কাছ  থেকে পাওয়া তথ্যই মানুষ জানে এক সময় গৌরনদী সদরসহ বৃহত্তর গৌরনদী (আগৈলঝাড়াসহ) র গোটা এলাকা  ছিল নদী দ্বারা বেষ্ঠিত।  গৌরনদীর পূর্বাঞ্চলে রয়েছে আড়িয়াল নদী।  আর আড়িঁয়াল খার শাখা নদী হচ্ছে পালরদী নদী।এক সময় পালরদী ছিল স্রোতস্বীনি নদী গৌরনদীর  প্রবীনজন ও ইতিহাসবিদদের  সংজ্ঞা মতে,  আড়িঁয়াল খাঁ নদীর  শাখা নদী পালরদী নদীকে ঘিরেই গৌরনদীর নামকরন করা হয়। এ নদীর সাথে গৌরনদীর সংযুক্ততা রয়েছে।আড়িঁয়াল খাঁ  নদীর শাখা নদী  পালরদী নদীর প্রবাহমান পানির রং ছিল গৌড় বর্নের অনুসারে গৌড়্ওবং নদী যুক্ত হয়ে  ‘‘গৌরনদী’ র নামকরন করা হয়েছে গৌরনদী কলেজের প্রতিষ্ঠতা অধ্যক্ষ মোঃ তমিজউদ্দিন ও গৌরনদীর  ইতিহাস লেখক প্রফেসর  মোসলেম উদ্দিন সিকদারের একাধিক লেখায় গৌরনদীর নামকরনের আদী ইতিহাস হিসেবে এ তথ্যের উল্লেখ্য রয়েছে। রবরিশালের ইতিহাস লেখক সিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ তার বইয়ে নদীর নামানুসারে  গৌরনদীর নামকরনের কথা উল্লেখ করেছেন।      
আগৈলঝাড়া উপজেলাঃ
সতের শতকে নবাব আলী খাঁর আমলে তাঁর এক সুবাদার ছবি খাঁ এ পরগনার (আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, উজিরপুর, কোটালীপাড়া)কিয়দংশের দায়িত্বে থাকাকালে প্রজা শাসনের পাশাপাশি কিছু জনহিতকর কাজ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি পরগণার ভেতর দাস শ্রমিকদের দিয়ে এক রাতের মধ্যে একটি দিঘি খনন করাতেন। দিঘি খনন শেষে শ্রমিকরা নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের আগৈল (মাটি কাটার ঝুড়ি) ঝাড়তো। সেখানে একটি মাটির টিবি গড়ে ‍উঠে এবং ক্রমান্বয়ে তার কলেবর বৃদ্ধি পায়। ফুল্লশ্রীর এক অংশে লোকালয় গড়ে উঠলে তার নামকরণ করা হয় আগৈলঝাড়া।
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলাঃ
অনুমান করা হয়, আগা বাকেরের সময়ে ‘মেহেন্দী খান’ নামে তাঁর এক প্রতিনিধি এই এলাকায় এসে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র (গঞ্জ) গড়ে তোলেন। তার নামানুসারে এলাকার নাম হয় মেহেন্দীগঞ্জ। এছাড়া বলা হয়ে থাকে, আগা বাকেরের এক পুত্রের নাম ছিল মেহেদী খান, যার নাম থেকেও মেহেন্দীগঞ্জ নামকরণ হতে পারে।
মুলাদী উপজেলাঃ
মুলাদী উপজেলার ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, ‘মুলাই খান’ নামক এক বিখ্যাত দরবেশ এ্ই অঞ্চলে বাস করতেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় কাজের জন্য এই এলাকায় খুবই বিখ্যাত ছিলেন মনে করা হয়। মনে করা হয়, এই মুলাই খানের নামানুসারে এই জনপদের নাম হয়েছে মুলাদী। মুলাদীর ‘দী’ শব্দাংশটি সম্ভবত দ্বীপ হতে। বর্তমান মুলাদী উপজেলা বিশাল বিশাল নদী বেষ্টিত দ্বীপসদৃশ একটি ভূখন্ড। এই ভূখন্ডে মুলাই খান ইসলাম প্রচারের জন্য এসে আস্তানা স্থাপন করতে তা ‘মুলাই দ্বীপ’ নামে পরিচিতি পায় এবং লোকমুখে বিবর্তিত ও সংক্ষিপ্ত হয়ে মুলাদ্বীপ এবং তা হতে বর্তমান মুলাদী রুপলাভ করেছে। এছাড়া ‘দী’ শব্দটি ডিহি শব্দের অপভ্
রংশ হতে পারে। একসময় (1922 সালের পূর্বে) কয়েকটি মৌজা নিয়ে একটি তৌজি এবং কয়েকটি তৈৗজি নিয়ে একটি ডিহি গড়ে ‍উঠতো। আজকের মুলাদী একসময় একটি ডিহি ছিল এবং তা মুলাই খানের নামানুসারে মুলাই ডিহি নামে পরিচিত ছিল। পরে লোকমুলে পরিবর্তিত হয়ে মুলাদী নাম ধারণ করা অস্বাভাবিক নয়।
হিজলা উপজেলাঃ
জনশ্রুতি থেকে জানা যায়, এই অঞ্চল হিজল গাছে আচ্ছাদিত ছিল। এই হিজল গাছ থেকে হিজলা নামের উদ্ভব বলে ধারণা করা হয়।
বরিশাল জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস বরিশাল জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on July 31, 2018 Rating: 5

বরগুনা জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস

July 31, 2018
বরগুনা নামের সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া না গেলেও জানা যায় যে, উত্তরাঞ্চলের কাঠ ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলে কাঠ নিতে এস খরস্রোতা খাকদোন নদী অতিক্রম করতে গিয়ে অনুকুল প্রবাহ বা বড় গোনের জন্য এখানে অপেক্ষা করত বলে এ স্থানের নাম হয় বড় গোনা।কারো মতে আবার স্রোতের বিপরীতে গুন (দড়ি) টেনে নৌকা অতিক্রম করতে হতো বলে এ স্থানের নাম বরগুনা। কেউ কেউ বলেন, বরগুনা নামক কোন প্রভাবশালী রাখাইন অধিবাসীর নামানুসারে বরগুনা।  আবার কারো মতে বরগুনা নামক কোন এক বাওয়ালীর নামানুসারে এ স্থানের নাম করণ করা হয় বরগুনা।
আমতলী ‍উপজেলা
লোকশ্রুতি আছে সুদূর অতীতকালে পায়রা নদীর তীরে বহু আম গাছ ছিলমাঝিরা  তাদের নৌকা বাঁধত সেই আম গাছের সাথে নৌকা  বাঁধার স্থানটি কালে কালে হয়ে যায় আমতলা থেকে আমতলী। অন্যদিকে,  পায়রা নদীর একটি প্রবাহ আমতলী বন্দরের পূর্ব দিক দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে আমতলী নদী প্রবাহিত হয়েছিল।  নৌযান চলাচল মুখরিত আমতলী নদীর তীরে পাঠান আমলে গড়ে ওঠেছিল জনবসতি ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র।  মোগল যুগে পায়রা  নদীতে মগ, পর্তুগীজদের লুণ্ঠন ও অত্যাচার বেড়ে গেলে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আমতলী নদীই ছিল একমাত্র ভরসা। এ নদীর নাম অনুসারে এলাকার নাম হতে পারে আমতলী।  আবার, অতীতে  আমতলী যখন অরণ্য আচ্ছাদিত  হয়ে  দুর্গম এলাকা হিসেবে ছিল তখন আরকান থেকে আগত জনৈক আমপাটি  নামক  মগ দলপতি ইংরেজি সরকার থেকে ইজরা নিয়ে আমতলী প্রথম আবাদ শুরু করে ছিলেন। সম্ভবতঃ  আমপারিট মগের নাম অনুসারেও এলাকায়  নাম আমতলী হতে পারে।
বামনা উপজেলাঃ
বামনার নামকরণ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কারও মতে শফি মাহমুদ চৌধুরী কর্তৃক নির্মিত কালী মন্দিরের ব্রাহ্মণ পুরোহিত কীর্তি চরণ মুখপাধ্যায়কে স্থানীয় লোকজন ব্রাহ্মণ শব্দের অপভ্রংশ বামনা হিসেবে ডাকত। তার ডাক নামানুসারেই বামনা নামের উৎপত্তি হয়। কারও মতে তৎকালীন সুন্দর বন এলাকার আওতাভুক্ত বিষখালী নদী দিয়ে বাওয়ালীরা নৌকায় যাতায়াত করত । এক সময় বামন নামক কোন এক বাওয়ালী নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হলে তার নামানুসারে বামনা নাম করণ হয়। কারও মতে একদল মৌলবাদী পর্যটক ধর্ম প্রচারের জন্য এখানে আসেন এবং ধর্ম প্রচার শুরু করেন। কিন্তু বেশীর ভাগ লোকই বামপন্থী মনা হওয়ায় তাদেরকে ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করতে পর্যটক দল ব্যর্থ হয়ে এলাকার মানুষকে বাম মনা উপাধি দেয়। এই বাম+মনা থেকেই বামনা শব্দের উদ্ভব হয়। আরও প্রসিদ্ধ প্রচলন রয়েছে যে, চীন দেশ থেকে চেং ইয়াং নামে এক নাবিক পাঁচটি সম্প্রদায়ের লোক এবং কিছু যন্ত্রপাতি ও পশু -পাখি নিয়ে জাহাজ চালিয়ে এখানে এসে বর্তমান চেঁচানে নামেন ।  চেঁচান নামটি প্রধান নাবিক চেং ইয়াং-এর নামানুসারে হয়েছে। এই পাঁচটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এক দল ছিলেন ব্যবসায়ী যারা বাণিজ্যের লক্ষ্যে এসেছিলেন, এক দল ছিলেন কৃষিজীবী যারা কৃষি কাজ করতেন, এক দল ছিলেন নাবিক যারা জাহাজ বা নৌকায় পারাপার ও পরিবহনের কাজ করতেন, এক দল ছিলেন রাখাল যারা পশু পালন ও চারন করতেন এবং এক দল ছিলেন ব্যায়ামবিদ যারা নিরাপত্তা ও যুদ্ধ-বিগ্রহের দায়িত্ব পালন করতেন।  ইংরেজীতে এ পাঁচ সম্প্রদায়ের নাম হল ব্যবসায়ী = Businessman যা থেকে B, কৃষিজীবী= Agriculturist যা থেকে A, নাবিক = Mariner যা থেকে M, রাখাল= Nomad যা থেকে N এবং ব্যায়ামবিদ= Acrobat যা থেকে A । এই সম্প্রদায়গুলোর নামের পাঁচটি আদ্যাক্ষর দিয়ে B+A+M+N+A= BAMNA যা বাংলায় বামনা নামকরণ করা হয়।
পাথরঘাট উপজেলা
পাথরঘাটা নামকরণের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে প্রায় তেমন কিছুই জানা যায় না। তবে জনশ্রুতি রয়েছে যে, এ উপজেলার ভূ-অভ্যন্তরে বিদ্যমান পাথরের অস্তিত্ব থেকেই পাথরঘাটা নামকরণের সূচনা হয়েছিল। ১৯০৩ সনে এ নামকরণ সূত্রপাতঘটে মর্মে ধারণা করা হয়। তৎকালীন বৃটিশ আমলে চট্রগ্রাম মাইজ ভান্ডার শরীফ থেকে বাগেরহাটের খাজা খান জাহান আলী নদীপথে অলৌকিকভাবে বাগেরহাটে পাথর ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় বিশখালী এবং বলেশ্বর নদীর মোহনায় এক রাতের জন্য ঘাটি স্থাপন করেছিলেন। উক্ত পাথরের কিয়দংশ এখানে রয়ে যায়। সে কারণেই এলাকাটি পাথরঘাটি নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে পাথরঘাটি নামটি পাথরঘাটা নামে নবরূপ লাভ করে।


বেতাগী উপজেলাঃ
বেতাগী শব্দের নামকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মত রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশের মতে বেদাগী থেকে বেতাগী নামের সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করা হয়। অষ্টাদশ প্রথম দিকে ইংরেজ শাসকরা শত শত নিরীহ লোক ধরে এনে দক্ষিণ জনপদে লবন চাষ করাতে কৃষকদের উপর নানারকম জোর জবরদস্তি ও নির্যাতন চালাতো। এমনকি তাদেরকে তামাক সেবনেও অভ্যস্ত করতো বলে জানা যায়। এসময় তৎকালীন শাসনামলে বুজুর্গ উমেদপুরের প্রতাপশালী জমিদার ও কৃষক নেতা আইন উদ্দীন সিকদার এ অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন ও গড়ে তোলেন ও কৃষকদের সংগঠিত করে লবন চাষের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেন। এতে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় অনেক ইংরেজও মারা যায়। ইংরেজরা আইন উদ্দিন সিকদারের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে ও তাকে কুখ্যাত ডাকাত হিসেবে আখ্যায়িত করে। ১৭৮৯ সালে তার জমিদারী কেড়ে নেয়া হয় এবং তাকে গ্রেফতার করে নির্বাসনে পাঠানো হয়। সে সময়ের ধর্মীয় নেতা নেয়ামত শাহের নিকট এলাকার জনসাধারন আইন উদ্দিন সিকদারের মুক্তির জন্য সাহায্য চাইলে তিনি তৎকালীন ঢাকাস্থ মোগল সুবেদার ইসলাম খার নিকট আইন উদ্দিন সিকদারের পক্ষে সুপারিশ করে একটি পত্র প্রেরণ করেন। এ চিঠিতে তাকে দাগী নয়, বেদাগী (অপরাধী নয়) বলে আখ্যায়িত করে। ফরাসী শব্দ বেদাগী থেকেই কালক্রমে বেতাগী শব্দের রুপান্তরিত হয়ে বেতাগীর উদ্ভব হয় বলে ধারনা করা হয়।
এছাড়া বেতাগী অঞ্চলে আগে অনেক বেত পাওয়া যেত এবং বেতের আগা একটি জনপ্রিয় সবজি হিসাবে সকলের কাছে বেশ কদর ছিল। সেই "বেতাগা" এর সূত্র ধরে বেতাগীর উৎপত্তি হতে পারে। বেতাগীর নামকরণে আবার কেউ কেউ মনে করেন, ইংরেজদের কাউকে কোন কাজে বাধ্য না করাতে পারলে চরম বেত্রাঘাত করত। এখানের মানুষ প্রতিবাদী হওয়ার কারনে আরও বেশি বেত্রাঘাতের স্বীকার হত। এই বেত্রাঘাত শব্দানুসারে বেতাগী নামের সৃষ্টি হয়েছে।


n style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: 18.6667px;">তথ্যসুত্রঃ জেলা তথ্যবাতায়ন, উইকিপিডিয়া।
বরগুনা জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস বরগুনা জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on July 31, 2018 Rating: 5

শেরপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস

July 30, 2018

শেরপুর অঞ্চল প্রাচীনকালে কামরূপা রাজ্যের অংশ ছিল। মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে এই এলাকা "দশকাহনিয়া বাজু" নামে পরিচিত ছিল। পুর্বে শেরপুরে যেতে ব্রহ্মপুত্র নদ খেয়া পাড়ি দিতে হত। খেয়া পারাপারের জন্য দশকাহন কড়ি নির্ধারিত ছিল বলে এ এলাকা দশকাহনিয়া নামে পরিচিতি লাভ করে। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ভাওয়ালের গাজী, ঈসা খানের বংশধর থেকে দশকাহনিয়া এলাকা দখল করে নেয়। দশকাহনিয়া পরগনা পরবর্তীতে গাজী বংশের শেষ জমিদার শের আলী গাজীর নামানুসারে শেরপুর নামে নামকরণ করা হয়
শেরপুর জেলার উপজেলা সমুহঃ শেরপুর সদর, নালিতাবাড়ী উপজেলা, শ্রীবরদী উপজেলা, নকলা উপজেলা, ঝিনাইগাতী উপজেলা।
নালিতাবাড়ী উপজেলাঃ
এক সময় এ অঞ্চলে উৎপাদিত হতো উন্নতমানের পাট। পাটের প্রতিশব্দ নলিতা বা নাইল্যা।  এই নলিতা বা নাইল্যা থেকেই উপজেলার নাম হয়েছে নালিতাবাড়ী। 
শ্রীবরদী উপজেলাঃ
শ্রীবরদী উপজেলাটির প্রাচীন নাম শম্ভুগঞ্জ।  শ্রী শম্ভুনাথ তালুকদার অত্র এলাকার জমিদারের পক্ষে খাজনা সংগ্রহ করতেন।  অনেকের মতে তার নামানুসারে এলাকাটির নাম শম্ভুগঞ্জ রাখা হয়েছিল।  কথিত আছে ‘শ্রী বর দা’নামে এক অপরুপ সুন্দরী জমিদার কন্যা ছিল।  দেখতে অপরুপ সুন্দরী এ জমিদার কন্যাকে  প্রজা সাধারন ‘শ্রী বড় দিদি’বলে সম্বোধন করতো।  সেই শ্রী বড় দিদি‘র সংক্ষিপ্ত রুপ ‘শ্রী-বর-দি’থেকে আজকের ‘শ্রীবরদী’। বর্তমানে উপজেলা সদরের মৌজার নাম শ্রীবরদী শম্ভুগঞ্জ আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নকলা উপজেলাঃ
“নকলা”  নামটি এসেছে আরবী ‘নাখলা’ শব্দ থেকে।  নাখলা শব্দের অর্থ খেজুরের বাগান। এই আরবী শব্দটি থেকে অনুমিত হয়,  এটি একটি প্রাচীন জনপদ। তবে এ অঞ্চলটিতে হিন্দুদের আধিক্য ছিল। পরবর্তীতে তারা স্থানান্তরিত হয়েছে অথবা প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে গেছে। বলাবাহুল্য, নকলা থানা স্থাপনের পূর্বে প্রসিদ্ধ ব্যবসায় কেন্দ্র ও নৌ বন্দর চন্দ্রকোনাকে থানা করার পরিকল্পনা ছিল ব্রিটিশ সরকারের। কারণ, চন্দ্রকোনায় ছিল মহারাজ শশীকান্ত চৌধুরী ও জমিদার গোপাল দাস চৌধুরীর দুটি কাচারী। যেখানে প্রজাদের নিকট থেকে খাজনা আদায় করা হতো।  ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন বিদ্যাপিঠ চন্দ্রকোনা রাজলক্ষী উচ্চ বিদ্যালয়, সূর্যবালা দেবী হাসপাতাল, পোস্ট অফিস এবং বড় বড় পাঠ ক্রয় কেন্দ্রসহ শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার প্রাণ কেন্দ্র ছিল চন্দ্রকোনা। ব্রহ্মপুত্র, দশানি আর মৃগী অববাহিকায় চন্দ্রকোনা নৌ বন্দরথেকে কলকাতা ও বিলেতে ডান্ডির সাথে সরাসরি নৌ যোগাযোগ ছিল। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে আন্দামান ফেরত বিপ্লবী নগেন্দ্র চন্দ্র মোদক, বিপ্লবী যোগেশ চন্দ্রকর্মকার এবং বিপ্লবী মন্মথ দে চন্দ্রকোনায় জন্মেছিলেন।
ঝিনাইগাতি উপজেলাঃ
31 মে 1970 সালৈ নালিতাবাড়ী থানার কিছুটা অংশ নিয়ে ঝিনাইগাতী থানা সদর প্রতিষ্ঠিত হয়। বলা হয়ে থাকে, ঝিনাইগাতি নামটি ঝিনাই এবং গাতী শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। ঝিনাই শব্দটি এসেছে ‘ঝিনুকৎ থেকে। মুক্তা আহরণের জন্য ঝিনুক সংগ্রহ করা হতো। এছাড়া ঝিনুক তেকৈ চুন, বোতাম তৈরী হতো। আর গাতি হচ্ছে জমিদারীর একটি অংশ। যে ব্যক্তি মুল জমিদারের নিকট থেকে সুনির্দিষ্ট ভুমি রাজস্বের বিনিময়ে ইজারা গ্রহণ করতেন সাধারণত তার নামে হতো গাতির নাম তবে এর ব্যতিক্রম ও হতো। এখানে ঝিনুকের নামে গাতির নাম হওয়ায় এলাকার নাম হয়েছে ঝিনাইগাতি।   

শেরপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস শেরপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরনের ইতিহাস Reviewed by sm sohage on July 30, 2018 Rating: 5
Powered by Blogger.