মেহেরপুর নামকরণ সম্পর্কে এ পর্যন্ত দুটি অনুমানসিদ্ধ তথ্য আমরা জানা যায়। একটি হচ্ছে ইসলাম প্রচারক দরবেশ মেহের আলী নামীয় জনৈক ব্যক্তির নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ষোড়শ শতকের অথরা তার কিছুকাল পরে মেহেরপুর নামকরণের সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলে মুসলিম শাসনের সূত্রপাত হতেই ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু হয়েছিল। বৃহত্তর কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বারোবাজার, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর সহ প্রভৃতি অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচার শুরু করেন হযরত খাঁন জাহান আলী (রাঃ)। পীর খান জাহান আলী গৌড় থেকে ভৈরব নদী পথে মেহেরপুর হয়ে বারোবাজার গিয়ে বাগেরহাট গিয়েছিলেন। তার সাথে সেই সময়ে ৩৬০ জন দরবেশ ও ৬০ হাজার সৈন্য ছিল বলে কথিত আছে। তিনি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চরে ইসলামের বিজয় পতাকা উত্তোলন করে জনবসতি ও শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন। এ অঞ্চলে ঐ একই সময়েই বেশ কয়েকজন ইসলামের ঝান্ডাবাহক আল্লাহর পরম আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তিত্বের আগমন ঘটে। শাহ ভালাই, শাহ আলাই ও এনায়েত উল্লাহর নাম উল্লেখযোগ্য। পুণ্য আত্না ইসলামের ঝান্ডাবাহক দরবেশ মেহের আলী শাহ-এর নামের সাথে সঙ্গতি রেখে মেহেরপুর নামকরণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যতদূর জানা যায় তাতে মেহের আলী অত্যন্ত প্রভাবশালী খ্যাতিমান আধ্যাত্নিক ব্যক্তি হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। যার ফলে তাঁর নামের প্রাধান্য পেয়ে যায়। মেহেরপুর নামকরণের উৎপত্তি সম্পর্কে দ্বিতীয় দিকটি এখানে উল্লেখ্য, পূর্ববঙ্গ রেলওয়ের বাংলায় ভ্রমণ গ্রন্থে বিখ্যাত বচনকার মিহির ও তাঁর নিজের পুত্রবধু খনা (খনার বচন বিখ্যাত) ভৈরব নদীর তীরস্থ এ অঞ্চলে বাস করতেন। তার নামানুসারে প্রথমে মিহিরপুর এবং পরবর্তীতে অপভ্রংশে মেহেরপুর নামকরণ হয়েছে বলে অনুমান করা হয়।
মেহেরপুর জেলার উপজেলা সমুহঃ মুজিবনগর, মেহেরপুর সদর, গাংনী।
মুজিবনগর উপজেলা
মুজিবনগর এর পুর্ব নাম বৈদ্যনাথতলা। উপজেলার নামকরণে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে জানা যায় যে ১৯৭১ সনে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রসিদ্ধ বৈদ্যনাথতলা আম্র কাননে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের হেডকোয়াটার্স স্থাপিত হয় এবং ১৭ এপ্রিল এ স্থলেই অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অস্থায়ী সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নামের সাথে মিল রেখে এ স্থানের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর।
গাংনী উপজেলা
গাংনী নামের সাথে যুক্ত হয়ে আছে এ অঞ্চলের ভৌগলিক পরিবেশের পরিচয়। গাংনী পদটিই এখানে প্রধান। নদী বা নদীর মৃতপ্র
ায় ধারাকে এ এলাকার মানুষ গাং বা গাঙ বলে। অনুমান করা হয় যে, গাঙ্গেয় অববাহিকার এ এলাকায় প্রথম বসতি স্থাপনকারী মানুষেরা অন্যদের বসবাসে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ‘এ এলাকায় গাং অর্থাৎ নদী নেই’- এমন ঘোষণা দেয়। ‘গাং নেই’পরবর্তীতে হয়ে যায়- ‘গাংনী’। এ এলাকার মানুষেরা নেই বুঝাতে ‘নি’উচ্চারণ করে। গাংনী নামকরণে ভিন্ন আর একটি যুক্তিও পাওয়া যায়। পশ্চিমে কাজলা নদী এবং পূর্বে মাথাভাঙ্গা নদীর মধ্যবর্তী দোয়ার অঞ্চলে এ থানার অবস্থান। সেই অর্থে এ নদীর প্রধান উৎস গঙ্গা। গঙ্গার কন্যা মনে করার কারণে খরস্রোতা মাথাভাঙ্গাকে একসময় এ এলাকার মানুষ ‘গাংগীনি’ বলে ডাকত। গাংগীনি থেকে গাঙ্গনী বা গাংনী শব্দের উৎপত্তি। গাংনী নামকরণে মুলতঃ এ অঞ্চলের নদী সম্পৃক্ততার পরিচয় ফুটে উঠেছে।
ায় ধারাকে এ এলাকার মানুষ গাং বা গাঙ বলে। অনুমান করা হয় যে, গাঙ্গেয় অববাহিকার এ এলাকায় প্রথম বসতি স্থাপনকারী মানুষেরা অন্যদের বসবাসে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ‘এ এলাকায় গাং অর্থাৎ নদী নেই’- এমন ঘোষণা দেয়। ‘গাং নেই’পরবর্তীতে হয়ে যায়- ‘গাংনী’। এ এলাকার মানুষেরা নেই বুঝাতে ‘নি’উচ্চারণ করে। গাংনী নামকরণে ভিন্ন আর একটি যুক্তিও পাওয়া যায়। পশ্চিমে কাজলা নদী এবং পূর্বে মাথাভাঙ্গা নদীর মধ্যবর্তী দোয়ার অঞ্চলে এ থানার অবস্থান। সেই অর্থে এ নদীর প্রধান উৎস গঙ্গা। গঙ্গার কন্যা মনে করার কারণে খরস্রোতা মাথাভাঙ্গাকে একসময় এ এলাকার মানুষ ‘গাংগীনি’ বলে ডাকত। গাংগীনি থেকে গাঙ্গনী বা গাংনী শব্দের উৎপত্তি। গাংনী নামকরণে মুলতঃ এ অঞ্চলের নদী সম্পৃক্ততার পরিচয় ফুটে উঠেছে।
মেহেরপুর জেলা ও এর উপজেলা সমূহের নামকরণের ইতিহাস
Reviewed by sm sohage
on
August 01, 2018
Rating:
No comments: