Results for ভাস্কর্য

ঢাবির বিভিন্ন ভাষ্কর্যের নামকরণ

July 22, 2018

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ‘৬৬-এর ছয় দফা, ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব জাতীয় আন্দোলনের সূতিকাগার এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ।
এসব আন্দোলন থেকে উদ্দীপনা নিতে এবং দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণীয় করে রাখতে এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একাধিক ভাস্কর্য। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত হয়েছে। এসবের মধ্যে কলাভবনের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলা’, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে ‘শান্তির পায়রা’,  সড়ক দ্বীপের ‘স্বোপার্জিত স্বাধীনতা’, টিএসসি চত্বরে ‘সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য’, বেগম রোকেয়া হলের ভেতরে ‘রোকেয়া ভাস্কর্য’, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে ‘মা ও শিশু ভাস্কর্য’, জগন্নাথ ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের মাঝামাঝি ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ উল্লেখযোগ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আসলেই কল্পনায় ‘অপরাজেয় বাংলা’র ছবিই প্রথমে ভাসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর অপরাজেয় বাংলা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আন্দোলন, মিছিল-মিটিংয়ের প্রাণকেন্দ্রও এই ভাস্কর্যটি। এখানে ছাত্র সংগঠনগুলোর বার্ষিক সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়। এর নামকরণের পেছনে রয়েছে ইতিহাস। ১৯৭৩ সালে ‘স্বাধীনতা ভাস্কর্য’ নামে এর প্রাথমিক কাজ শেষ হয়। এই বছরের ২২ জুলাই তত্কালীন দৈনিক বাংলায় সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী ‘অপরাজেয় বাংলা’ শিরোনামে একটি উপ-সম্পাদকীয় লেখেন। সেই থেকে লোকজনের মুখে স্বাধীনতা ভাস্কর্যটির নাম হয় ‘অপরাজেয় বাংলা’। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিরল যারা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেননি।  প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী এর পাদদেশে ভিড় করেন।
সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান ভাস্কর্য নিদর্শন।  এটিও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সকল দাবি-দাওয়া, আন্দোলনের অন্যতম স্থান। দেশে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কিংবা সন্ত্রাসবাদ-মৌলবাদ মাথা চাড়া  দিয়ে উঠলে উত্তপ্ত হয়ে উঠে এই ভাস্কর্যের পাদদেশ। এখানে জমায়েত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। ১৯৯২ সালের ১৩ মার্চ গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্যের সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মিছিলে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মঈন হোসেন রাজুসহ সব শহীদের স্মরণে নির্মিত এ ভাস্কর্যটি। স্বোপার্জিত স্বাধীনতা। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বুকের তাজা খুন ঢেলে স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকা উপহার দিয়েছে যারা তাদের স্মরণে নির্মিত এটি। এর নীচে খোদাই করে লেখা আছে ‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই-তার ক্ষয় নাই। প্রকৃতপক্ষে, দেশমাতৃকার জন্য নিজের জীবনকে যারা বিলিয়ে দিয়েছে, আজীবন তারা এ জাতির হূদয়ের মণিকোঠায় ভাস্বর হয়ে থাকবেন।
জগন্নাথ হলের পশ্চিম পার্শ্বে ফুলার রোডে ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের সর্ববৃহত্ ভাস্কর্য
টির অবস্থান।  
সুত্র: দৈনিক ইত্তেফাক।

ঢাবির বিভিন্ন ভাষ্কর্যের নামকরণ ঢাবির বিভিন্ন ভাষ্কর্যের নামকরণ Reviewed by sm sohage on July 22, 2018 Rating: 5
Powered by Blogger.