কাশ্মীরের গ্রামের নাম বাংলাদেশ

কাশ্মীরকে ভূস্বর্গ বলেন অনেকেই। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর এই জায়গাটিতে এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার বলাকা কাব্যগ্রন্থের কিছু কবিতা লিখেছিলেন। ছবির মতো সুন্দর জায়গাতে এসে ভ্রমণপিপাসুরা মনের খোরাক মিটিয়ে থাকেন। কাশ্মীরের সৌন্দর্য বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেকেই আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। বিশ্বের আর সব দেশের মতো বাংলাদেশি অনেক পর্যটকেরও অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা এই কাশ্মীর। কিন্তু আমরা কতজন জানি যে কাশ্মীরেও আছে একটি বিশেষ গ্রাম যার নাম দেওয়া হয় বাংলাদেশ। বিখ্যাত উলার হ্রদের তীরে ভাসমান এই বাংলাদেশ গ্রাম।


কাশ্মীরে ঘুরতে গেলে ভ্রমণপিপাসুরা এই গ্রাম থেকেও ঘুরে আসতে পারেন চাইলে। কাশ্মীরের জেলা সর্বমোট ২২টি। শ্রীনগর থেকে ৮০ কি.মি উত্তর দিকে গেলে একটি জেলা পড়বে। যে জেলার নাম বান্ডিপুরা। এই বান্ডিপুরা জেলার আলুসা তহশিলে একটি গ্রামের নাম বাংলাদেশ। বিখ্যাত উলার হ্রদের তীরে ভাসমান এই গ্রাম। বান্ডিপুরা-সোপুরের মধ্য দিয়ে মাটির রাস্তা ধরে পাঁচ কিলোমিটার হাঁটলেই এই গ্রামটির অস্তিত্ব পাওয়া যাবে। স্বাভাবিকভাবেই উলার হ্রদের তীরে অবস্থিত গ্রামটি অতি মনোমুগ্ধকর। চারদিকে স্বচ্ছ জলরাশি। একপাশে রয়েছে সুউচ্চ পর্বত। কিন্তু, নাগরিক কিছু সাধারণ সুবিধা এখনো ঠিকঠাকভাবে পৌঁছে না গ্রামবাসীর কাছে। বান্ডিপুরার ডিসি অফিস ২০১০ সালে এই গ্রামটিকে আলাদা গ্রামের মর্যাদা দেয়।


 নামকরণঃ কাশ্মীরের এই গ্রামটির নামকরণের ইতিহাস ঘাঁটলে পাওয়া যায় যে এর সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের। ১৯৭১-এর যোগসূত্র রয়েছে। তখন কাশ্মীরের সেই অঞ্চলে একটি গ্রাম ছিল নাম জুরিমন। ১৯৭১ সালে এই জুরিমন গ্রামের ৫-৬টি ঘরে আগুন লাগে। আগুনের শিখায় জ্বলেপুড়ে যায় ঘরগুলো। এই অবস্থায় গৃহহীন হয়ে পড়ে গ্রামের মানুষজন। তাই তারা পুড়ে যাওয়া জায়গা থেকে কিছুটা দূরে পার্শ্ববর্তী ফাঁকা জায়গায় সবাই মিলে ঘর তোলেন। ঠিক সেই সময়ই পৃথিবীর বুকে জন্ম নিচ্ছে নতুন একটি রাষ্ট্র। তার নাম বাংলাদেশ। পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে আমাদের বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সেই একই সময় গৃহহীন মানুষগুলো দুঃসময় মোকাবিলা করে শুরু করেন তাদের নবজনম। তাই তারাও তাদের নতুন গ্রামের নাম রাখেন বাংলাদেশ।

কাশ্মীরের গ্রামের নাম বাংলাদেশ কাশ্মীরের গ্রামের নাম বাংলাদেশ Reviewed by sm sohage on March 30, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.